বিশিষ্ট নজরুল গবেষক ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার বলেছেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের সময় দেশে সাংবাদিকদের ওপর মারাত্মক নির্যাতন হয়েছে। তাঁর দাবিতে, এ সময় প্রায় ৭০ জন সাংবাদিক হত্যা হয়েছেন এবং দুই হাজারের বেশি সাংবাদিক হামলার শিকার হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। এমনকি সিনিয়র সাংবাদিক আবুল আসাদকেও তাঁর অফিসে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘চব্বিশের অভ্যুত্থানে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে তিনি বলেন, সাংবাদিকতা মানবতার গুরুত্বপূর্ণ পেশা, যেখানে সততা, জ্ঞান ও বিবেকের সঠিক প্রয়োগ জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, সাংবাদিকের দায়িত্ব হলো সত্য প্রকাশ করা—সাদা কে সাদা, কালো কে কালো বলা। তিনি আরও জানান, “জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা আকবর কবির একবার সাংবাদিক সমাজকে বিবেকবর্জিত ও ক্রয়যোগ্য বলেছেন, কিন্তু আমি বলব, সাংবাদিকেরা জাতির দর্পণ।”
খালেদা জিয়ার কারাবন্দিত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে জেল দেওয়া হয়েছে, আমাকেও চারটি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে—প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতাসহ নানা অভিযোগে। অথচ আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন মুক্তিযোদ্ধাই জানে কীভাবে ন্যায়বিচার করতে হয়।”
তিনি আরও বলেন, “সংবাদ মানুষের চিন্তার প্রতিফলন, পত্রিকা সমাজের আয়না। দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশে এই সমাজের চতুর্থ স্তম্ভটি আজ অবমানিত। শাসক শ্রেণি সংবাদকে ভয় পায়, কারণ সত্য সংবাদই তাদের জবাবদিহিতে বাধ্য করে।”
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল-আওয়াল। প্রধান আলোচক ছিলেন কবি আবদুল হাই শিকদার, বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান। আলোচনায় অংশ নেন যুগান্তরের সহসম্পাদক এমদাদুল হক এবং ইত্তেফাকের রাজনীতি ও নির্বাচন বিষয়ক সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা।