যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট পড়েছে, যেখানে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি এখন পর্যন্ত স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। মুসলিম এই প্রার্থীর উত্থান মার্কিন রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যদিও তার সমালোচনায় সরব হয়ে উঠেছেন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও ইহুদি ধর্মগুরুরা।
মামদানি এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো মুসলিম মেয়র হিসেবে ইতিহাস গড়তে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সবার জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস, চাইল্ড কেয়ার সুবিধা এবং প্রায় দশ লাখ নিউইয়র্কবাসীর ভাড়া মওকুফের পরিকল্পনা। একইসঙ্গে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রকাশ্য সমালোচনার কারণে আন্তর্জাতিক মহলেও দৃষ্টি কেড়েছেন এই তরুণ রাজনীতিক।
তবে তার এই অবস্থান ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর অসন্তোষ তৈরি করেছে। টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের র্যাবাইরা (ইহুদি ধর্মগুরু) যৌথভাবে একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করছেন, যেখানে মামদানির বিরুদ্ধে “ইহুদীবিদ্বেষ ছড়ানোর” অভিযোগ আনা হয়েছে। উদ্দেশ্য—ইহুদি ভোটারদের তাকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানানো।
এ পর্যন্ত ওই চিঠিতে এক হাজারেরও বেশি র্যাবাই সই করেছেন, যা মার্কিন রাজনীতিতে নজিরবিহীন। এমনকি যারা এতে অংশ নেননি, তাদের নামও তালিকাভুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মামদানির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমো তাকে “ইসলামপন্থি” আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেছেন যে তার নীতিগুলো অর্থনৈতিকভাবে অযৌক্তিক। তবুও তরুণ প্রজন্ম ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সমর্থনে মামদানি এগিয়ে আছেন বলে সাম্প্রতিক জরিপ ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আগামী ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন। বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচন শুধু প্রশাসনিক নয়—ধর্ম, জাতি ও আদর্শিক বিভাজন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের নগর রাজনীতিতে এক নতুন মানচিত্র আঁকবে।