সৌদি আরবের নতুন গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিত শেখ ড. সালেহ বিন ফাওজান বিন আবদুল্লাহ আল-ফাওজান। বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের জারি করা এক রাজকীয় আদেশে এই নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়। একই আদেশে তাকে সৌদি সিনিয়র আলেম পরিষদের চেয়ারম্যান এবং গবেষণা ও ফতওয়া বিষয়ক সভাপতির দায়িত্বও অর্পণ করা হয়েছে। মন্ত্রীর মর্যাদায় তিনি এসব দায়িত্ব পালন করবেন, এবং নিয়োগটি অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজকীয় আদালত।
৯০ বছর বয়সী ড. সালেহ আল-ফাওজান দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের অন্যতম শীর্ষ ইসলামি আলেম হিসেবে পরিচিত। তিনি সিনিয়র আলেম পরিষদের সদস্য, স্থায়ী ফতওয়া কমিটির সদস্য এবং একাধিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৩৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের আল-কাসিম প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পিতার মৃত্যুর পর স্থানীয় এক ইমামের কাছে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে ইসলামি জ্ঞানচর্চায় নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিবেদিত করেন। রেডিওর জনপ্রিয় অনুষ্ঠান নূর আলা আল-দারব ও টেলিভিশনের নিয়মিত ধর্মীয় আলোচনার মাধ্যমে তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। তার ফতোয়া ও ধর্মীয় বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
ইসলামি ফিকহ, আকিদাহ ও শরিয়াহ আইন বিষয়ে অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন ড. আল-ফাওজান। তার আরবি ভাষার বইগুলো বহু ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্যপুস্তক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শরিয়াহভিত্তিক চিন্তাধারা, দাওয়াতি কার্যক্রম এবং ইসলামী সমাজে ইতিবাচক প্রভাবের জন্য তিনি মুসলিম বিশ্বে গভীর শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন।
ধর্মবিষয়ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ড. আল-ফাওজানের নেতৃত্বে সৌদি আরবের ধর্মীয় গবেষণা, ফিকহ ও ফতওয়া কার্যক্রম আরও প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রভাবশালী হবে।
উল্লেখ্য, তার পূর্বসূরি শেখ আবদুল আজিজ আল-শেখ, যিনি দীর্ঘদিন সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, গত ২৩ সেপ্টেম্বর ৮১ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। নতুন এই নিয়োগের মাধ্যমে সৌদি আরবে ধর্মীয় নেতৃত্বে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।