ইসলামি শরিয়তে বাবা-মায়ের মর্যাদা সর্বোচ্চ স্থানে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন—
“তোমার রব আদেশ দিয়েছেন, তোমরা তাঁরই ইবাদত করবে এবং মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণ করবে। তাদের কেউ বা উভয়ে বার্ধক্যে পৌঁছালে তাদের ‘উফ’ বলো না, ধমক দিও না, বরং সম্মানজনকভাবে কথা বলো।” (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ২৩)
মানুষের দেখা স্বপ্ন সাধারণত তিন প্রকার—
১) কল্পনা বা চিন্তা থেকে আসা স্বপ্ন।
২) আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা স্বপ্ন, যা সুসংবাদ, সতর্কতা বা ভবিষ্যতের কোনো ঘটনার ইঙ্গিত বহন করে।
৩) শয়তানের পক্ষ থেকে আসা স্বপ্ন, যা মানুষকে ভয় বা দুশ্চিন্তায় ফেলে।
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
“যখন কেয়ামত ঘনিয়ে আসবে, তখন মুসলমানদের স্বপ্ন অধিকাংশই সত্য হবে। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সর্বাধিক সত্যভাষী, তার স্বপ্নও সর্বাধিক সত্য হবে। মুসলমানের স্বপ্ন নবুয়তের পঁয়তাল্লিশ ভাগের একভাগ।” (সহিহ মুসলিম)
মৃত মা-বাবাকে স্বপ্নে দেখা দুইভাবে হতে পারে—
১) কখনো তা স্মৃতি বা কল্পনা থেকে আসে,
২) আবার কখনো আল্লাহর পক্ষ থেকে ইশারা হিসেবেও হতে পারে।
যদি কেউ মৃত মা-বাবাকে স্বপ্নে দেখে, তাহলে তাদের জন্য দোয়া, ইস্তেগফার ও সদকা করা উচিত। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে—
“হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন, যেমন তারা আমাকে শৈশবে লালন-পালন করেছেন।” (সুরা ইসরা, আয়াত: ২৪)
হাদিসে এসেছে,
“কোনো ব্যক্তি জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা পেয়ে বলবে—আমি এত মর্যাদা কীভাবে পেলাম? তাকে বলা হবে—তোমার সন্তানের দোয়া ও ইস্তেগফারের কারণে।” (ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)
এছাড়া, সাহাবিরা মৃত মা-বাবার পক্ষ থেকে সদকা করতেন। যেমন সাদ ইবনে উবাদা (রা.) তাঁর মৃত মায়ের পক্ষ থেকে বাগান সদকা করে দেন, এবং নবীজি ﷺ বলেন—“হ্যাঁ, এটি তোমার মায়ের উপকারে আসবে।” (সহিহ বুখারি)
সুতরাং, মৃত মা-বাবাকে স্বপ্নে দেখা মুসলমানদের জন্য স্মরণ ও অনুপ্রেরণার বার্তা—
তাদের জন্য দোয়া করা, ক্ষমা চাওয়া এবং সদকা করা আমাদের কর্তব্য ও সৌভাগ্যের কাজ।