
বাংলাদেশ ২০২৬ সালে বড় ধরনের ব্যান্ডউইথ ঘাটতির মুখোমুখি হতে পারে, কারণ তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল চালু না হওয়ায় সরকারি সাবমেরিন ক্যাবল দুটি মাত্র চাহিদার অর্ধেক অংশ মেটাতে পারবে। বর্তমানে দেশে দৈনিক প্রায় ৮ হাজার ৪০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে, যা আগামী বছর প্রায় ১৪ হাজার জিবিপিএসে পৌঁছাবে। সরকারি ক্যাবলের সক্ষমতা মাত্র ৭ হাজার ২২০ জিবিপিএস হওয়ায় বাকি চাহিদা ভারত থেকে আমদানি করতে হচ্ছে, যার কারণে বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।
বেসরকারি খাতের তিনটি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের কাজ আটকে আছে কারণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাননি উদ্যোক্তারা। এই ক্যাবলগুলোর সক্ষমতা ৪৫ হাজার জিবিপিএস, যা ২০২৬ সালের শুরুতেই চালু হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত অনুমতির জন্য প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। মেটাকোর সাবকম লিমিটেডের পরিচালক আমিনুল হাকিম জানান, গত বছর মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় আবার অনুমতির জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং অনুমতি পেলে ডিসেম্বর মাসেই কাজ শুরু হবে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বাধা নেই, তবে অঞ্চলভিত্তিক নিয়মাবলী মেনে কাজ করতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের কাজ চলমান, যা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি বা শেষ নাগাদ বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে।
বর্তমানে সারাদেশে মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করে ১৩ কোটি গ্রাহক। স্টারলিংক সেবা চালু হওয়ার পর ব্যান্ডউইথের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ডিজিটাল বিকাশ ও অর্থনীতির জন্য ব্যান্ডউইথের পর্যাপ্ত ও স্থায়ী সরবরাহ নিশ্চিত করাই বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
আইএসপিএবির হিসাব অনুযায়ী, ২০২৭ সালে দৈনিক ব্যান্ডউইথের চাহিদা হবে প্রায় ১৭,৭৮৯ জিবিপিএস, যা মেটাতে হলে অবিলম্বে সাবমেরিন ক্যাবল সম্প্রসারণ ও বেসরকারি অনুমতি দেওয়ার বিষয়গুলোতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।