কাবুলে পাকিস্তানি ড্রোন হামলা: কূটনৈতিক বার্তা নাকি প্রতিশোধ?

আপলোড সময় : ১০-১০-২০২৫ ১১:৩৫:৪০ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১০-১০-২০২৫ ১১:৩৫:৪০ অপরাহ্ন
গত রাতে আফগানের রাজধানী কাবুলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দ্বারা চালানো বলে অভিযুক্ত ড্রোন হামলায় দুই দফা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে; তালেবান সরকার তা ‘সার্বভৌম ভূমি লঙ্ঘন’ ও ‘নজিরবিহীন সহিংসতা’ হিসেবে নিন্দা করেছে, আর পাকিস্তান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে হামলা স্বীকার করেনি—ঘটনাকে ঘিরে কূটনৈতিক বার্তা পাঠানো বনাম পুরনো শত্রুতার প্রতিশোধ—দুইই ব্যাখ্যাই সামনে এসেছে।
 
আলোচ্য হামলার তাত্পর্য কেবল অঞ্চলীয় নিরাপত্তা নয়; এটি ঘটেছে এমন সময়ে যখন আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ভারত সফরে রয়েছেন, ফলে কিছু বিশ্লেষক এটিকে ভারত-আফগান ঘনিষ্ঠতাকে চ্যালেঞ্জ করার কূটনৈতিক সংকেত হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা-বিশ্লেষকরা বলছেন পাকিস্তান সাম্প্রতিক সময়ে সামরিক কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিশোধ নিতেই টিটিপি (তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান) নেতৃত্বকেও লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে।
 
তালেবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে যে পাকিস্তান আফগানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে, ডুরান্ড লাইনের কাছে পাকিস্তানি সীমান্ত এলাকায় বেসামরিক বাজারে হামলা চালিয়েছে এবং কাবুলের সার্বভৌম ভূখণ্ড লঙ্ঘন করেছে—এই কাজকে তারা ‘নজিরবিহীন ও জঘন্য’ আখ্যা দিয়েছে এবং যদি পরিস্থিতি আরো খারাপ হয় তার দায়ভার পাকিস্তানের উপরই পড়বে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে। পাকিস্তানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে বলছেন, আফগান ভূখণ্ড পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হবে। পাকিস্তান এখনও হামলাটি স্বীকার বা প্রত্যাখ্যান করেনি।
 
সংবাদ তদন্তে মেশানো প্রতিবেদন ও মোবাইল ভ্রাম্যমাণ দলগুলো বিস্ফোরণের কোনো স্বচ্ছ ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন পাননি—বিবিসি প্রতিবেদক সন্দেহভাজন এলাকায় বড় ধ্বংসাবশেষ দেখেননি, তবে সেখানে তালেবান নিরাপত্তাবাহিনীর উপস্থিতি ও ভ্রাম্যমাণ চেকপয়েন্ট বেড়ে গেছে। ঘটনার পর টিটিপি সম্পর্কে গুজব ছড়ায় যে বোমাটি তাদের নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদকে লক্ষ্য করেছিল; পরে টিটিপি একটি অপ্রমাণিত ভয়েস নোট জারি করে মেহসুদ জিন্দে আছে দাবি করেছে।
 
ঘটনাটি কূটনীতি ও নিরাপত্তার সংঘর্ষের প্রতিচ্ছবি—যেখানে একটি আঘাতকে প্রতিদান হিসেবে বা ঘষানো রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি দিল্লি থেকে শান্তি তাগিদ দিয়েছেন এবং বার্তা দিয়েছেন সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব; তিনি পাকিস্তানকে অনুরোধ করেছেন, এই ধরনের ভুল পুনরাবৃত্তি না করা হোক। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যদি স্পষ্ট প্রমাণ না মেলে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তেজনাপূর্ণভাবে বর্ধিত হতে পারে—এজন্য সীমান্ত-নিয়ন্ত্রণ, তথ্য-স্বচ্ছতা এবং কূটনৈতিক সংলাপ জরুরি।

সম্পাদকীয় :

লাইসেন্স নং: TRAD/DNCC/013106/2024 বার্তা বিভাগ: [email protected] অফিস: [email protected]

অফিস :

যোগাযোগ: মিরপুর, শেওড়াপাড়া হটলাইন: 09638001009 চাকুরী: [email protected]