
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ আলোচনার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক শেষ হয়েছে, তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের সময়সীমা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। বুধবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
প্রায় আট মাস ধরে চলা আলোচনায় দলগুলো ৮৪টি বিষয়ে সম্মত হয়েছে, যদিও ৯টি প্রস্তাবে আপত্তি রয়ে গেছে। জুলাই সনদ গণভোটের মাধ্যমে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত থাকলেও, এটি নির্বাচনের আগে নাকি একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে, গণভোটে কয়টি প্রশ্ন থাকবে এবং কার্যপ্রণালি কেমন হবে— এসব বিষয়ে মতপার্থক্য থেকে গেছে।
বিএনপির প্রস্তাব অনুযায়ী প্রথমে জুলাই সনদ জারি করে তার প্রজ্ঞাপনকে গণভোট আইনে রূপান্তর করা উচিত, যা পরে সংসদের অনুমোদন পাবে। তাদের মতে, একই দিনে বা আগে গণভোট হলেও ফলাফল অপরিবর্তিত থাকবে। নির্বাচনের আগে আলাদা গণভোট আয়োজনকে তারা নির্বাচন বিলম্বিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী চাইছে নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন-পূর্ব গণভোট, কারণ তাদের মতে কয়েকটি প্রস্তাব নির্বাচনসংশ্লিষ্ট। জামায়াত নেতা ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, নির্বাচন ও গণভোট সমান্তরালভাবে হলে কিছু কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হলে গণভোটের ফলও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
আলোচনায় অংশ নেওয়া অন্যান্য দলগুলো বলছে, বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে অমতের কারণেই সিদ্ধান্ত গ্রহণে সময় লেগেছে। বৈঠকে ড. আলী রীয়াজ সকল পক্ষকে ধন্যবাদ জানান এবং জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান করেন। তিনি জানান, ১৬ ও ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ সাক্ষরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে এবং ১-২ দিনের মধ্যে কমিশন প্রস্তাব চূড়ান্ত করে সরকারকে পাঠাবে।
বুধবারের বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)সহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও অংশ নেন।