চট্টগ্রাম ইপিজেডে পণ্য পাচারে পলাতক আ.লীগ নেতাদের প্রভাব: গোয়েন্দা প্রতিবেদনে নতুন তথ্য

আপলোড সময় : ০৪-১০-২০২৫ ১২:১৮:০৯ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৪-১০-২০২৫ ১২:১৮:০৯ অপরাহ্ন
 

চট্টগ্রাম ও কর্ণফুলী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) এখনো সক্রিয় একটি সংঘবদ্ধ পাচারচক্র। রাষ্ট্রীয় এক গোয়েন্দা সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানা গেছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের কয়েকজন স্থানীয় পলাতক নেতা এই পাচারচক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের মদদেই শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার করে পোশাক, জুতা, মেশিনের যন্ত্রাংশসহ নানা পণ্য বাইরে পাচার করা হচ্ছে।
 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঝুট ও ভাঙারি মালের আড়ালে চোরাচালান করা এসব পণ্য পরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি হয়। পাচারকৃত অর্থের ভাগ পাচ্ছেন ইপিজেড থানা পুলিশ, কাস্টমস কর্মকর্তা ও বেপজার নিরাপত্তাকর্মীরা। প্রায় ১০টি কারখানা এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
 

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, ইপিজেড এলাকার দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতিই পাচারের প্রধান কারণ। এতে সরকারের বিপুল রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে এবং দুর্বৃত্তদের আনাগোনা বেড়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিন দফা পদক্ষেপ সুপারিশ করা হয়েছে— পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, গাড়ি তল্লাশি জোরদার, এবং আউটগেটে ওজন মাপার যন্ত্র স্থাপন।
 

সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সোবহান জানিয়েছেন, ইপিজেডে এখন নজরদারি জোরদার করা হয়েছে এবং ঘোষণার চেয়ে বেশি ওজনের ট্রাক নিয়মিত আটক করা হচ্ছে। আন্তঃসংস্থার সমন্বয় বাড়লে পাচার পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব বলেও তিনি মত দেন।
 

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সুমন, ব্যবসায়ী মোর্শেদুল ইসলাম তাজু, যুবলীগ নেতা দেবাশিস পাল দেবু ও আওয়ামী লীগ কর্মী শাহেদ চৌধুরী রবিন এই পাচারচক্রের মূল সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন। তারা বর্তমানে বিদেশে পলাতক রয়েছেন।
 

চিহ্নিত কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে— জে জে মিলস, প্রিমিয়ার ১৮৮৮, সেকশন সেভেন অ্যাপারেলস, এমএনসি অ্যাপারেলস, মেরিমো, ক্যান পার্ক, রিজেন্সি, প্যাসিফিক ক্যাজুয়াল ও এমজেডএম টেক্সটাইল।
 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিটি পণ্যবাহী গাড়ি থেকে পুলিশ, কাস্টমস ও বেপজার কর্মকর্তাদের নিয়মিত অর্থ প্রদান করা হয়। পুলিশের জন্য ৩০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত, কাস্টমসের জন্য ৮০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত, আর বেপজার নিরাপত্তাকর্মীদের জন্য ৩০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। বিনিময়ে এসব গাড়ি তল্লাশি ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হয়।
 

প্রাক্তন ইপিজেড থানার ওসি আক্তারুজ্জামান বিপ্লব এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও বেপজার উচ্চপর্যায়ে তদন্ত হয়েছে, তবে প্রতিবেদনের তথ্যের সত্যতা মেলেনি।” বর্তমান ওসি জামির হোসেন জানান, পাচার ঠেকাতে টহল ও তদারকি জোরদার করা হয়েছে।

সম্পাদকীয় :

লাইসেন্স নং: TRAD/DNCC/013106/2024 বার্তা বিভাগ: [email protected] অফিস: [email protected]

অফিস :

যোগাযোগ: মিরপুর, শেওড়াপাড়া হটলাইন: 09638001009 চাকুরী: [email protected]