
গাজার উদ্দেশে অগ্রসরমান আন্তর্জাতিক ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র ওপর হামলা ও অবরোধ চালিয়েছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। বহরে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে এবং ‘আলমা’ নামের একটি জাহাজে সরাসরি হামলার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বহরে থাকা বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম।
বুধবার (১ অক্টোবর) ফ্লোটিলার জাহাজগুলো থেকে লাইভ সম্প্রচার হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। জানা গেছে, তেল আবিবের বাধার কারণে সম্প্রচার বন্ধ করা হয়। বর্তমানে বহরটি গাজা উপকূল থেকে ৯০ নটিক্যাল মাইলেরও কম দূরত্বে অবস্থান করছে।
এর আগে ইসরায়েলের একটি যুদ্ধজাহাজ আগ্রাসীভাবে কয়েক মিনিট ধরে ফ্লোটিলার অগ্রবর্তী জাহাজ ‘আলমা’কে ঘিরে রাখে। এতে নেভিগেশন ও যোগাযোগব্যবস্থা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। ‘আলমা’র যাত্রী ব্রাজিলের নাগরিক থিয়াগো আভিলা জানিয়েছেন, এই আক্রমণে ক্যামেরা, সরাসরি সম্প্রচারসহ সব যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে পড়ে।
ফ্লোটিলার কর্মীরা আগেই জানিয়েছিলেন, এ যাত্রা উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ ইসরায়েলি বাহিনীর বাধার মুখে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। বাস্তবেও বুধবার ভোর থেকেই ফ্লোটিলার দিকে অচিহ্নিত কয়েকটি নৌযান অগ্রসর হতে দেখা যায়। সংঘর্ষের পরও ফ্লোটিলা সদস্যরা গাজায় পৌঁছাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয়েছে।
তাদের অভিযোগ, ইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজ ফ্লোটিলার বেশ কিছু নৌকাকে লক্ষ্য করে ভীতি প্রদর্শন ও বিপদসঙ্কুল কৌশল নিয়েছে। এমনকি ‘আলমা’র ক্যাপ্টেনকে দিক পরিবর্তন করতে বাধ্য করা হয়। এ সময় বহরের আরেকটি জাহাজকেও হয়রানি করা হয়।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, সুমুদ নৌবহরের অভিযানের সঙ্গে মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমের কোনো সম্পর্ক নেই, বরং এটি ‘উসকানিমূলক’। দেশটি আগেই ঘোষণা করেছিল যে, ফ্লোটিলাকে গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। চলতি বছরের জুন ও জুলাই মাসে গাজায় সাহায্য নিয়ে ঢোকার দুটি প্রচেষ্টা ইতোমধ্যেই ব্যর্থ করে দিয়েছে ইসরায়েল।
জানা গেছে, চলমান অভিযানে অংশ নেওয়া ফ্লোটিলায় রয়েছে ৪০টিরও বেশি বেসামরিক নৌকা এবং প্রায় ৫০০ জন যাত্রী। এদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের শহিদুল আলম, ইতালির কয়েকজন রাজনীতিবিদ, সুপরিচিত সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গসহ ৪৪ দেশের মানবাধিকারকর্মীরা।