মশিউর সিকিউরিটিজ কেলেঙ্কারি: শত শত বিনিয়োগকারীর টাকা আত্মসাৎ

আপলোড সময় : ০১-১০-২০২৫ ১২:২২:১৯ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০১-১০-২০২৫ ১২:২২:১৯ অপরাহ্ন

অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী শের আলী প্রায় ১৫ বছর আগে মশিউর সিকিউরিটিজে বিও হিসাব খোলেন। দুই দফায় মোট ২৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাকে কিছু না জানিয়েই তার সব শেয়ার বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করে প্রতিষ্ঠানটি। দেড় বছর ধরে ঘুরে বেড়ালেও সেই টাকা ফেরত পাননি শের আলী।

তিনি বলেন, “চাকরির বেতনে সংসার চলে, কিন্তু সন্তানের ভবিষ্যৎ ভেবে বিনিয়োগ করেছিলাম। এখন সেই টাকাই হাতছাড়া হয়ে গেছে।”

একইভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা শাহজাহান আলী। চাকরিজীবনে সঞ্চিত অর্থের পাশাপাশি পেনশনের টাকাও বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। কিন্তু ৬০ লাখ টাকারও বেশি বিনিয়োগ থেকে প্রায় সবটাই আত্মসাৎ করেছে মশিউর সিকিউরিটিজ।

শাহজাহান আলী বলেন, “ওরা আমার ৯০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে। ১০০ টাকার মধ্যে যদি ৯০ টাকাই নিয়ে যায়, তবে আমার হাতে থাকে কী?”

শের আলী ও শাহজাহান আলীর মতো শত শত বিনিয়োগকারী একই ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অনেকেই অর্থের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। হারানো অর্থ ফেরত পেতে তারা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, বিএসইসি, দুদকসহ নানা প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

তদন্তে জানা গেছে, বিনিয়োগকারীদের সমন্বিত হিসাব থেকে প্রায় ৬৮ কোটি টাকা এবং বিও হিসাবের শেয়ার বিক্রি করে আরও ৯২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে মশিউর সিকিউরিটিজ। বিকল্প সফটওয়্যার ব্যবহার করে এ প্রতারণা করা হয়, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকাশ্যে আসে। এরপরই প্রতিষ্ঠানটির সব শাখা বন্ধ হয়ে যায়।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এ ঘটনায় বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বড় ধাক্কা লেগেছে। তাদের মতে, ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান দায়িত্ব।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী বলেন, “বিনিয়োগকারীদের যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে।”

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) জানিয়েছে, বিনিয়োগকারীদের পাওনা ফেরাতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মালিকপক্ষের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিএসইসি মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, “আমরা চাই বিনিয়োগকারীদের দাবি পূর্ণাঙ্গভাবে মেটানো হোক। তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য মালিকপক্ষের সম্পদ ব্যবহার করা হবে।”

প্রতারণা ঠেকাতে বর্তমানে সব ব্রোকারেজ হাউসকে একই ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে বিএসইসি। এতে বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিওতে গোপনে পরিবর্তন করার সুযোগ থাকবে না বলে জানায় সংস্থাটি।

সম্পাদকীয় :

লাইসেন্স নং: TRAD/DNCC/013106/2024 বার্তা বিভাগ: [email protected] অফিস: [email protected]

অফিস :

যোগাযোগ: মিরপুর, শেওড়াপাড়া হটলাইন: 09638001009 চাকুরী: [email protected]