
পাকিস্তানের ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ আখ্যা দিয়েছে কমনওয়েলথ অবজারভার গ্রুপ (সিওজি)। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচন প্রক্রিয়ার নানা ঘাটতি নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও স্বচ্ছতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে। একই সঙ্গে দেশটির গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার সুপারিশ করা হয়েছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথনের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের পর্যবেক্ষক দল পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নির্বাচনের আগে ও পরে নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপ সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ নষ্ট করেছে। বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-কে দলীয় প্রতীক ‘ব্যাট’ না দেওয়া এবং তাদের প্রার্থীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিতে বাধ্য করাকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার একটি বড় ত্রুটি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
এছাড়া নির্বাচনের রাতে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখা, ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব এবং কিছু কেন্দ্রে ভোটের ফলের সঙ্গে চূড়ান্ত ফলাফলের অসংগতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে পর্যবেক্ষক দল। প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব কারণে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ সীমিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ইমরান খানকে নির্বাচনের আগে একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে কারাগারে পাঠানো, পিটিআই নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি, অফিস ও বাসায় তল্লাশি—এসব পদক্ষেপ কার্যত সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে। একই সময়ে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে পক্ষপাতমূলক কভারেজ এবং ইমরান খানের নাম উচ্চারণে নিষেধাজ্ঞা নির্বাচনী প্রচারণার ভারসাম্য নষ্ট করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ভবিষ্যতে নির্বাচনকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্বচ্ছ করতে সিওজি নির্বাচনী আইন ও প্রশাসন সংস্কার, রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মতো একাধিক সুপারিশ করেছে।
পিটিআই এ বিষয়ে অভিযোগ করে বলেছে, কমনওয়েলথ প্রতিবেদন প্রকাশে অযথা দেরি করেছে এবং সেনা-সমর্থিত সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে সংগঠনটি জানিয়েছে, বিলম্ব প্রক্রিয়ার অংশ ছিল এবং প্রতিবেদনটি পাকিস্তান সরকার ও নির্বাচন কমিশন আগেই পেয়েছিল।