
গাজীপুরের টঙ্গীতে কেমিক্যাল কারখানার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর খন্দকার জান্নাতুল নাঈম (৩৭)। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
২২ সেপ্টেম্বর টঙ্গীর সাহারা মার্কেট এলাকায় কেমিক্যাল কারখানায় আগুন নেভাতে গিয়ে গুরুতর দগ্ধ হন নাঈম। তার শরীরের প্রায় ৪২ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। ওই দুর্ঘটনায় নাঈমসহ চারজন ফায়ার সার্ভিস সদস্য আহত হয়েছিলেন। এরপর থেকে একে একে তিনজনের মৃত্যু হলো। ঘটনার পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর ফায়ারফাইটার শামীম আহমেদ এবং ২৪ সেপ্টেম্বর ফায়ারফাইটার নুরুল হুদা মারা যান। সর্বশেষ জীবন দিলেন ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর জান্নাতুল নাঈম।
খন্দকার নাঈম ১৯৮৮ সালের ২৪ আগস্ট শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের খন্দকার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৪ সালে মোল্লার টেক উদয়ন বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও পরবর্তী সময়ে ফুলপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে যোগ দেন। কর্মজীবনে তিনি মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ ফায়ার স্টেশনে স্টেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর হিসেবে চট্টগ্রাম ও সর্বশেষ টঙ্গী ফায়ার স্টেশনে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ছিলেন এবং এক সন্তানের জনক। তার পিতা খন্দকার মোজাম্মেল হক ও মাতা দেলোয়ারা বেগম। দেশের দুর্ঘটনা মোকাবিলায় প্রাণঘাতী ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এতদিনে ৫১ জন ফায়ার সার্ভিস সদস্য আত্মত্যাগ করেছেন। সেই দীর্ঘ তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলো খন্দকার জান্নাতুল নাঈমের নাম।