
কলকাতা হাইকোর্ট বাংলাদেশে পাঠানো বীরভূমের দুই পরিবারের ছয় সদস্যকে ফেরত আনার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ওপরই বর্তাবে। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
কেন্দ্রীয় সরকার এর আগে সোনালী বিবিসহ ছয়জনকে বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে বাংলাদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে শুনানিতে আদালত এই পদক্ষেপকে সমালোচনা করে তা খারিজ করে দেয়। বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, ওই ছয়জন ভারতীয় নাগরিক এবং তাদের ফিরিয়ে আনা সরকারের দায়িত্ব। আদালত মুলতুবি রাখার আবেদনও নাকচ করে দেয়।
গত শুনানিতে আদালত প্রশ্ন তোলে, আইন অনুযায়ী অন্তত ৩০ দিন আটক রেখে তদন্ত করা উচিত ছিল। অথচ অভিযোগ অনুযায়ী সোনালী বিবিকে ২৬ জুন বাংলাদেশে পাঠানো হয়। আদালতের প্রশ্ন ছিল, মাত্র দু’দিনে কীভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো যে তারা বাংলাদেশি? এত তাড়াহুড়োর কারণ কী?
শুনানিতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আপত্তি তোলা হয়। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী জানান, যেহেতু ঘটনাটি দিল্লিতে ঘটেছে তাই কলকাতা হাইকোর্টের এখতিয়ার নেই। তিনি আরও দাবি করেন, নাগরিকত্ব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করা হয়েছে এবং মামলা গ্রহণযোগ্য নয়।
দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোনালির পরিবার এখনও হলফনামায় প্রমাণ দিতে পারেনি যে তারা বাংলাদেশি নন। তবে বিচারপতি চক্রবর্তী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুধু বাঙালি বস্তি থেকে আসার কারণে কাউকে বাংলাদেশি বলা যায় না।
প্রসঙ্গত, সোনালী বিবি ও তার পরিবার প্রায় দুই দশক ধরে দিল্লির রোহিণীতে কাগজকুড়োনো ও গৃহপরিচারিকার কাজ করছিলেন। পরিবারের দাবি, জুন মাসে দিল্লি পুলিশ তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং পরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।