
সড়ক ও নৌপথের পাশাপাশি দেশের আকাশপথেও ক্রমেই বাড়ছে মাদক চোরাচালান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, পাচারকারীরা নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে ইয়াবা বহন করছে—কখনো লাগেজের ভেতর বিশেষ চেম্বার তৈরি করে, আবার কখনো কাপড়ের ভেতরে বা যাত্রীদের পাকস্থলীর মাধ্যমে।
সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাগেজের হাতল ও কাপড়ে লুকানো প্রায় আট হাজার ইয়াবাসহ এক মা ও মেয়েকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ। লাগেজের হাতলের ভেতর থেকে উদ্ধার হয় ছয় হাজার পিস ইয়াবা এবং কাপড়ের মধ্যে পাওয়া যায় আরও দুই হাজার পিস। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটক রোজিনা ও তার মেয়ে ফাহমিদা কক্সবাজার থেকে টাকা নিয়ে এভাবে মাদক বহন করছিলেন।
পুলিশ জানায়, গত এক বছরে এ ধরনের অন্তত ১০টি চালান আটক করা হয়েছে, যেখানে প্রায় দেড় লাখ ইয়াবা উদ্ধার এবং ১৪ জন গ্রেফতার হয়েছে। একইসঙ্গে, পাকস্থলীর ভেতর করেও ইয়াবা বহনের ঘটনা ধরা পড়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার থেকে আসা রাজু মোল্লার দেহে এক্সরে করে ডিম্বাকৃতির ২০টি বস্তু শনাক্ত করা হয়, যেগুলো থেকে বের হয় এক হাজার ইয়াবা।
আর্মড পুলিশের অপারেশনাল কমান্ডার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, মিয়ানমারের মংডু থেকে ইয়াবা সমুদ্রপথে এনে নাফ নদীর মাধ্যমে কক্সবাজারে পৌঁছায়। পরে টেকনাফ ও উখিয়া হয়ে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় আসে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কিছু রোহিঙ্গা এতে জড়িত।
তবে আটক হওয়া বেশিরভাগ ইয়াবা বিমানবন্দরের স্ক্যানারে ধরা পড়েনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিকভাবে স্ক্যান না করার কারণে এমনটা ঘটছে। তারা বলছেন, মাদক চোরাচালান রোধে বিমানবন্দরে উন্নতমানের স্ক্যানার স্থাপন, প্রযুক্তিগত ঘাটতি পূরণ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।