
চিকিৎসক সংকট দূর করতে ৪৮তম স্পেশাল বিসিএসের মাধ্যমে তিন হাজার ডাক্তার নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, আগের ব্যাচগুলোর গেজেট চূড়ান্ত না হওয়ায় নতুন নিয়োগেও অর্ধেক পদ শূন্য থেকে যাবে। এতে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ঘাটতি পূরণের লক্ষ্য পুরোপুরি সফল হবে না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে চিকিৎসক পদ শূন্য রয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৯৮০টি। সংকট কমাতে ৪৫ থেকে ৪৮তম বিসিএস মিলিয়ে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে ৬ হাজার ৯২২ জনকে। কিন্তু ৪৪তম বিসিএসের গেজেট প্রকাশ না হওয়ায় পরবর্তী ব্যাচগুলোতে রিপিট পরীক্ষার্থী বেড়ে গেছে। ৪৫তম মৌখিক পরীক্ষা, ৪৬তম লিখিত ও ৪৭তম প্রিলিমিনারিতে বিপুল সংখ্যক প্রার্থী ছিলেন আগের ব্যাচের উত্তীর্ণ। এমনকি ৪৮তম স্পেশাল বিসিএসের ভাইভাতেও অর্ধেক প্রার্থী আগের তিনটি ব্যাচ থেকে। ফলে চূড়ান্ত নিয়োগে সিনিয়রিটি ও সুবিধা বিবেচনায় তারা আগের বিসিএসে অন্তর্ভুক্ত হলে, নতুন নিয়োগের কার্যকারিতা কমে যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ মনে করেন, আগে থেকে জমে থাকা জট না কাটালে সমস্যার সমাধান হবে না। তার মতে, ব্যাচভিত্তিক বিসিএস নিয়োগ প্রক্রিয়ার জটিলতা নিরসন করে দ্রুত গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
এদিকে পরীক্ষার্থীরা দাবি করছেন, ৩ হাজার নিয়োগের পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও ২ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিতে হবে। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাড়তি নিয়োগ সম্ভব নয়। তবে ইতোমধ্যে নতুন করে আরও ৩ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের অনুমোদন প্রক্রিয়া চলছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানিয়েছেন, সাত মাসের মধ্যে তিন হাজার ডাক্তার নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে, যা সাধারণত তিন বছরে হয়ে থাকে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী অক্টোবরেই নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা নিয়োগপত্র পাবেন। এছাড়া আরও তিন হাজার ডাক্তার নিয়োগের ফাইল অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কেবল দ্রুত নিয়োগই নয়, বরং টেকনিক্যাল জনবল বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও প্রভাবমুক্ত নিয়োগ কাঠামোও সমান জরুরি।