
তেলের প্রাচুর্য থাকা সত্ত্বেও তীব্র বিদ্যুৎ সংকটে জর্জরিত ইরাক এবার নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে। দেশটির প্রথম শিল্প-পর্যায়ের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কারবালার মরুভূমিতে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, যা সর্বোচ্চ ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে শনিবার এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এই পদক্ষেপ ইরাকের দীর্ঘদিনের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। বাগদাদের দক্ষিণ-পশ্চিমে আল-হুর এলাকায় প্রায় চারশো হেক্টর জমিতে স্থাপিত এই সৌর প্ল্যান্টটি হাজার হাজার সোলার প্যানেল দিয়ে সাজানো হয়েছে। সরকারের জাতীয় সৌর প্রকল্প দলের প্রধান নাসের করিম আল-সুদানি জানিয়েছেন, শুধু এটিই নয়, আরও দুটি বড় প্রকল্প নির্মাণাধীন ও পরিকল্পনাধীন রয়েছে। এর মধ্যে বাবিল প্রদেশে ২২৫ মেগাওয়াটের একটি প্ল্যান্টের কাজ চলছে এবং দক্ষিণের বসরা প্রদেশে ১,০০০ মেগাওয়াটের আরেকটি বিশাল প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আদেল করিমের মতে, বর্তমানে ইরাকে প্রায় ১২,৫০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কুর্দিস্তান অঞ্চল বাদে দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ সৌরশক্তি থেকে আসবে।
ইরাক বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে বিদ্যুৎ সংকটে ভুগছে। গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেলে চাহিদা বেড়ে ৫৫,০০০ মেগাওয়াটে পৌঁছে, অথচ উৎপাদন ক্ষমতা মাত্র ২৮,০০০ মেগাওয়াট। এর বড় একটি অংশ, প্রায় ৮,০০০ মেগাওয়াট, আসে ইরান থেকে আমদানি করা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। কিন্তু মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং ইরানের নিজস্ব জ্বালানি সংকটের কারণে এই সরবরাহ প্রায়ই ব্যাহত হয়। এসব সৌর প্রকল্প সম্পন্ন হলে একদিকে যেমন এই সংকট কিছুটা লাঘব হবে, তেমনি পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাবও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।