
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে দেশটির ওপর জাতিসংঘের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ নয়টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দেয় রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান ও আলজেরিয়া। দুটি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি ইরানের অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো সমঝোতা না হলে ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তির আওতায় প্রত্যাহার করা ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহাল হবে। ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম ঘিরে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় গত মাসেই যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি (ই-থ্রি) নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করে। এর আগে তারা সতর্ক করেছিল, কূটনৈতিক সমাধানে ইরান রাজি না হলে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ইরানি কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, ই-থ্রি দেশগুলো ২০১৫ সালের যৌথ পরমাণু চুক্তির বিরোধ মীমাংসা ব্যবস্থার অপব্যবহার করছে। ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদেহ বলেন, ইউরোপীয়রা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
২০১৫ সালের ঐতিহাসিক চুক্তিতে ইরান পরমাণু কর্মসূচি সীমিত রাখলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল। তবে ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বের হয়ে ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যা জেসিপিওএকে কার্যত অকার্যকর করে তোলে। ২০১৯ সাল থেকে ইরানও ধাপে ধাপে চুক্তির অঙ্গীকার শিথিল করে এবং পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করে।
সম্প্রতি ইসরাইলের নজিরবিহীন হামলায় ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি আবাসিক এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যাতে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। এর জবাবে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রও সাময়িকভাবে ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়ে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত করে। ১২ দিনব্যাপী সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি হয়।
গত সপ্তাহে তেহরান আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে নতুন একটি চুক্তি করে যাতে সংস্থাটিকে পুনরায় পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়। তবুও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়েছে।