
৩৩ বছর পর আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু প্রতীক্ষিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। দীর্ঘ সময় পর নির্বাচনের আয়োজনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ, আর প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এই নির্বাচনে ১১ হাজার ৭৪৩ শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ৭২৮ জন ছাত্রী এবং ৬ হাজার ১৫ জন ছাত্র। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে প্রার্থিতা করছেন ১৭৭ জন। এর মধ্যে সহসভাপতি পদে প্রার্থী ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৮ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে ১০ জন। একইসাথে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হল সংসদের নির্বাচন।
ভোটগ্রহণের জন্য প্রতিটি আবাসিক হলে কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১টি কেন্দ্র থাকবে ছাত্রদের জন্য এবং ১০টি হবে ছাত্রীদের জন্য। মোট ২২৪টি বুথে ভোট হবে এবং দায়িত্ব পালন করবেন ১৩৪ জন পোলিং কর্মকর্তা। জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. রাশেদুল আলম জানিয়েছেন, প্রতিটি কেন্দ্র মনিটরিং রুম থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং নির্বিঘ্ন ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে অন্তত ১২০০ পুলিশ সদস্য, পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্বে থাকবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা চৌকি। নির্বাচন শেষে পুরাতন রেজিস্টার ভবনের সিনেট হলে ভোট গণনা সম্পন্ন হবে। নারী শিক্ষার্থীদের ভোটকেন্দ্রে নারী সাংবাদিকদের উপস্থিতির আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
উল্লেখযোগ্য যে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি মাত্র চারটি বিভাগ, ২১ জন শিক্ষক ও ১৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে গঠিত হয় জাকসু এবং একই বছর অনুষ্ঠিত হয় প্রথম নির্বাচন। এর পর দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় পর আবার সেই ইতিহাসের নতুন অধ্যায় রচনা করতে যাচ্ছে আজকের এই ভোটগ্রহণ।