
রাজধানীর বাজারে নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী, সাধারণ ক্রেতাদের জন্য বাজারের নাগাল সীমিত হয়ে পড়েছে। শাক-সবজি, মুরগি, ডিম, চাল ও মাছসহ বেশিরভাগ প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প বেতনের মানুষদের জন্য সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
বেসরকারি চাকরিজীবী আল মামুন জানান, “বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম এতটাই চড়া যে দরদামের সুযোগ নেই। যা দাম বলা হচ্ছে, সেই দামেই কিনতে হচ্ছে। বাজারে যে টাকা নিয়ে আসি, সব শেষ হয়ে যাচ্ছে।” অন্য এক ক্রেতা খোকন বলেন, “প্রয়োজনের তুলনায় কম কিনতে হচ্ছে, না হলে সব পণ্য কেনা সম্ভব নয়। কঠোর মনিটরিং ছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।”
নয়াবাজার ও কারওয়ান বাজারে শুক্রবারের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, মুরগির দাম সপ্তাহান্তে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৭০–১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সোনালি মুরগি ৩২০–৩৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৬০০–৭০০ টাকা। ডিমের দামও ঊর্ধ্বমুখী; লাল ডিম প্রতি ডজন ১৫০ টাকা, সাদা ডিম ১৪০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ২৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরু ও খাসির মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
সবজির দামের ক্ষেত্রেও ওঠানামা লক্ষ্য করা গেছে। প্রতি কেজি গোল বেগুন ১৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০–৮০ টাকা, টমেটো ১৭০ টাকা, করলা ৭০ টাকা এবং পটল ৬০–৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসা, লাউ ও অন্যান্য শাক-সবজির দামও বেড়েছে। সরবরাহ কম হওয়ার কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে বিক্রেতারা উল্লেখ করেছেন। তবে কাঁচা মরিচের দাম কমেছে; ভারতীয় কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১২০ টাকা, দেশি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডালের বাজারেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রয়েছে। খোলা আটা ৪৫–৫০ টাকা, প্যাকেট আটা ৫৫–৬০ টাকা এবং দেশি মসুর ডাল কেজিতে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় মসুর ডাল কেজিতে দাম ৯৫–১০৫ টাকা। এছাড়া মাছের বাজারেও দাম বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে; বোয়াল ৭৫০–৯০০, রুই ৩৮০–৪৫০, ট্যাংরা ৭৫০–৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বাজারে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, “অনেক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতি মুনাফা করছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। সরকারী তদারকি কার্যকর নয়।”
মোটের ওপর, ক্রেতাদের জন্য নিত্যপণ্যের দামের এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা স্বাভাবিক সংসার পরিচালনায় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাজার পর্যবেক্ষণ, সরবরাহ বৃদ্ধি ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।