
যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি ও অতিরিক্ত শুল্কের ঘোষণা সত্ত্বেও ভারতকে তেল সরবরাহ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে রাশিয়া। মস্কোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থে জ্বালানি সহযোগিতা চলমান থাকবে এবং এ নিয়ে ভারতকে বিকল্প খুঁজতে হবে না। একই সঙ্গে রাশিয়া আশা করছে, শিগগিরই ভারত ও চীনের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
নয়াদিল্লিতে রুশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা বুধবার সাংবাদিকদের জানান, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক চাপ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারত রুশ জ্বালানি আমদানি অব্যাহত রাখবে বলে তারা বিশ্বাস করেন। দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স রোমান বাবুশকিন বলেন, রাশিয়া ও ভারত নিজেদের জাতীয় স্বার্থে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত নতুন শুল্কের প্রভাব মোকাবিলার পথ বের করবে।
ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ভারতের মোট আমদানির মধ্যে রুশ তেলের পরিমাণ ছিল মাত্র শূন্য দশমিক দুই শতাংশ। বর্তমানে সেই আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ শতাংশে। এ অবস্থায় রুশ তেল কেনার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ও জরিমানা আরোপ করেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের মোট শুল্ক বেড়ে ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে।
রাশিয়ার প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ডেনিস মান্টুরভ জানান, ভারতকে কেবল অপরিশোধিত তেলই নয়, তেলজাত পণ্য, কয়লা এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের সুযোগও রয়েছে। পাশাপাশি পারমাণবিক শক্তি খাতে সহযোগিতা বাড়াতেও আগ্রহী রাশিয়া।
রুশ উপ-বাণিজ্য কমিশনার ইভগেনি গ্রিভা বলেন, ভারতের জন্য রুশ তেল ক্রয় অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক। দেশটি ভারতীয় ক্রেতাদের গড়ে ৫ থেকে ৭ শতাংশ ছাড় দিয়ে থাকে এবং বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে সরবরাহ অব্যাহত রাখছে। তিনি আরও জানান, ভারতীয় ব্যাংকগুলোতে আটকে থাকা অর্থ সংক্রান্ত জটিলতা দূর হওয়ার পর মস্কো ভারতীয় রুপিতে মূল্য গ্রহণ শুরু করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে ‘‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’’ হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছে, রুশ পণ্য কেনার জন্য কেবল ভারতকে আলাদা করে চিহ্নিত করা অনুচিত এবং এটি দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।