জাকসু নির্বাচন

জাকসু ভোটার তালিকায় মৃত ও বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর নাম, নির্বাচনকে নিয়ে উদ্বেগ

আপলোড সময় : ২১-০৮-২০২৫ ১২:০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ২১-০৮-২০২৫ ১২:০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
প্রতিবেদক: ইরফান ইবনে আমিন পাটোয়ারী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।


আসন্ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জাকসু) নির্বাচনের প্রস্তুতি ঘিরে, বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই প্রকাশিত ভোটার তালিকায় একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। তালিকা যাচাই করে দেখা গেছে, সেখানে রয়েছে এমন শিক্ষার্থীদের নাম, যারা দীর্ঘদিন আগে মারা গেছেন, কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত হয়েছেন। একইসাথে গত জুলাই-আগস্টের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িত থেকে অভিযুক্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের নামও তালিকায় বহাল আছে।
 
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জাকসুর প্রাথমিক ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই তালিকায় বর্তমানে অধ্যয়নরত ও গবেষণারত শিক্ষার্থীদের নাম অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা থাকলেও, বাস্তবে মৃত শিক্ষার্থীর নামও পাওয়া গেছে। এমনকি যাদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে, তারাও ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। বিষয়টি ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রশ্ন ও বিতর্ক তৈরি করেছে।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, প্রশাসন তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বলেন, "একজন শিক্ষার্থী যদি মারা গিয়ে থাকে কিংবা বহিষ্কৃত হয়ে থাকে, তাহলে তিনি কোনোভাবেই জাকসুর ভোটার হতে পারেন না। অথচ, এই নামগুলো রাখা মানে নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা।"
 
অন্যদিকে, ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা মনে করছেন, ভোটার তালিকায় এমন অসঙ্গতি ইচ্ছাকৃতভাবে রাখা হতে পারে। তাদের ভাষ্য, জুলাই-আগস্টে সংঘর্ষের পর যেসব শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার বা সাময়িক বহিষ্কারের মুখে পড়তে হয়েছে, তাদের নাম তালিকায় থাকলে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ তৈরি হবে। এতে করে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হবে।
 
তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, "যেসব নাম ভুলবশত তালিকায় চলে এসেছে, সেগুলো বাদ দেওয়া হবে। মৃত বা বহিষ্কৃত কেউই চূড়ান্তভাবে ভোটার হিসেবে থাকবে না।"
 
তবুও, শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা কাটছে না। কারণ, এর আগে বিভিন্ন প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠে এসেছে। তারা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে এসব ত্রুটি দ্রুত সংশোধন না করা হলে জাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
 
তিন দশকেরও বেশি সময় পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাকসু নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাই যখন গণতান্ত্রিক চর্চার নতুন সূচনা দেখতে মুখিয়ে আছেন, তখন ভোটার তালিকার এমন অসঙ্গতি স্বাভাবিকভাবেই আস্থার সংকট তৈরি করছে। 
 
এখন সবার দৃষ্টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দিকে; তারা কত দ্রুত ও কতটা নিরপেক্ষভাবে তালিকা সংশোধন করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেন, সেটিই হয়ে উঠবে মূল প্রশ্ন।
 

সম্পাদকীয় :

লাইসেন্স নং: TRAD/DNCC/013106/2024 বার্তা বিভাগ: [email protected] অফিস: [email protected]

অফিস :

যোগাযোগ: মিরপুর, শেওড়াপাড়া হটলাইন: 09638001009 চাকুরী: [email protected]