জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ: বিদ্রোহীদের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে গেলেন আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ

আপলোড সময় : ১৯-০৮-২০২৫ ০৭:২৯:১৮ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৯-০৮-২০২৫ ০৭:২৯:১৮ পূর্বাহ্ন
প্রতিবেদক: ইরফান ইবনে আমিন পাটোয়ারী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

১৭ আগস্ট ২০২৫, রবিবার দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের গঠিত (৮ আগস্ট ২০২৫, বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটি ও হল কমিটির ঘোষণা দেওয়া হয়) বিতর্কিত বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটি ও হল কমিটি নিয়ে একদল বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী অবস্থান নেন কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে।
 
দুপুর আনুমানিক ১১:৩০ থেকে ১২টার দিকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। সাথে ছিলেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর ও সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনীকসহ শীর্ষ ৫ নেতা; তারা সবাই শিক্ষক লাউঞ্জে অবস্থান নেন। 
 
কিন্তু অপর দলে থাকা আনুমানিক শতাধিক নেতাকর্মী কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্যাফেটেরিয়ায় প্রবেশ করেন। ‘বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে আনা হয়েছে’, 'পকেট কমিটি মানি না, মানবো না' এর মতো বিভিন্ন স্লোগান ছড়িয়ে পড়ে, যা পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলে। 
 
উভয় পক্ষের অবস্থান ক্রমশ সংঘর্ষে পরিণত হলে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পাশাপাশি হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষকে শান্ত রাখতে সক্ষম হন। 
 
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে বলেন, "যাঁরা বিশৃঙ্খলা করেছেন, তাঁদের মধ্যে আমাদের সংগঠনের বহিষ্কৃত কিছু নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পাশাপাশি একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এটার সাথে জড়িত। একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে কিছু অসংগতি থাকলেও থাকতে পারে। সেগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। কিন্তু এটার সুযোগ নিয়ে একটি গোষ্ঠী বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে।"
 
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ.কে.এম. রাশিদুল আলম জানান, "ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটু ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছিল। প্রক্টরিয়াল টিম সেটা নিবৃত্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সবাইকে শান্ত পরিবেশ বজায় রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।"
 
এই ঘটনা শুধু রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়, বরং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আগমনে বিভক্ত শাখা গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা অসন্তোষ ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। শাখা ছাত্রদল গত ৮ আগস্ট বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটি ও ১৭টি হল কমিটি ঘোষণা করেছিল; যেখানে বিতর্কিত কর্মীদের পদায়ন এবং ত্যাগী নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করা হয়েছে, এমন অভিযোগও ছিল। 
 
সর্বোপরি, এই সংঘর্ষ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংগঠনগুলোর ভিতরেও নেতৃত্ব, স্বচ্ছতা এবং প্রতিনিধিত্বের চ্যালেঞ্জ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো রাজনৈতিক বা সংগঠনতান্ত্রিক ঘটনায় ছাত্র সমাজের ভবিষ্যৎ তৈরির মতো দায়িত্ব অক্ষুণ্ণ রাখা জরুরি।

সম্পাদকীয় :

লাইসেন্স নং: TRAD/DNCC/013106/2024 বার্তা বিভাগ: [email protected] অফিস: [email protected]

অফিস :

যোগাযোগ: মিরপুর, শেওড়াপাড়া হটলাইন: 09638001009 চাকুরী: [email protected]