
চলতি বছর জানুয়ারি থেকে পাঁচটি দেশের সাতটি শহরে অনুসন্ধান চালিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে গড়ে উঠা প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ শনাক্ত করেছে। এই অনুসন্ধানের সংক্ষিপ্ত ফলাফল অনুযায়ী ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানিক নামে প্রায় ৩৪৬টি সম্পদের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যা এখনও আংশিক চিত্র। ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্ত ও দেশের অনুকূলে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এবং সংশ্লিষ্টদের শাস্তি নিশ্চিত করতে আটটিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা সহযোগিতা করছে।
অনুসন্ধানের ফলে জানা গেছে, ৯টি দেশে ৩৫২টি বিদেশি পাসপোর্ট অর্থের বিনিময়ে অর্জন করেছেন কিছু বাংলাদেশি। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রিয়া, ডোমেনিকা, গ্রেনেডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, নর্থ মেসিডোনিয়া, মাল্টা, সেন্ট লুসিয়া ও তুরস্ক। তদন্তকারীদের মতে মূলত সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই, লন্ডন, নিউইয়র্ক, ভার্জিনিয়া এবং ফ্লোরিডায় এসব সম্পদের অবস্থান রয়েছে।
সিআইসি আরও জানিয়েছে, গত কিছু বছর অর্থ পাচারকারীরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডাটা মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে এখন সেই তথ্য উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে বিস্তারিত শুনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে পাচারকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সব সংস্থার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তিনি এবিষয়কে দেশদ্রোহীর পরিচায়ক বলে মন্তব্য করেন এবং ভবিষ্যতে কেউ যেন দেশের সম্পদ পাচার করতে না পারে, সেজন্য কঠোর নজির স্থাপনের আহ্বান জানান।
সরকার সম্পদের পুনরুদ্ধার, জবাবদিহিতা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান আরও বিস্তৃত করার নির্দেশ পেয়েছে এবং সরকার সর্বাত্মক সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে।