
স্পেনের কর্দোভায় অবস্থিত ঐতিহাসিক মসজিদ-ক্যাথেড্রাল অগ্নিকাণ্ডের পর একদিন বন্ধ থাকার পর শনিবার পুনরায় দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে লাগা আগুনে প্রাচীন এই স্থাপনাটির সীমিত ক্ষতি হলেও দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার ফলে বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগরীর মেয়র হোসে মারিয়া বেলিদো।
স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ধোঁয়া ও শিখা বের হতে দেখা যায়। প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই ইসলামি স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শনটি দেখতে আসেন। মেয়র জানান, আগুন মূলত একটি চ্যাপেলে সীমাবদ্ধ ছিল, যেখানে ছাদ সম্পূর্ণ ধসে পড়ে। পাশাপাশি ধোঁয়ার কারণে পাশের দুটি চ্যাপেলের অলংকৃত বেদি ও শিল্পকর্মে আংশিক ক্ষতি হয়। মোট ৫০-৬০ বর্গমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘটনার পর ভবনের সামনের সড়কে একাধিক দমকল ও পুলিশ বাহিনীর গাড়ি সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিল। ‘আলমানজর নেভ’ নামে পরিচিত ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি কোমর-উচ্চতার ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। কর্দোভার দমকল প্রধান ড্যানিয়েল মুনিওজ জানান, ৩৫ জন দমকলকর্মী রাতভর কাজ করে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। ২০০১ সালের অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে প্রতিবছর অগ্নিনির্বাপণ মহড়া অনুষ্ঠিত হওয়ায় কর্মীরা ভবনের প্রতিটি প্রবেশপথ, করিডোর ও জরুরি সংযোগস্থল সম্পর্কে সুপরিচিত ছিলেন, যা আগুন নিয়ন্ত্রণে বড় সহায়তা করেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ সূত্রমতে, যান্ত্রিক ঝাড়ু মেশিন থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি ৮ম থেকে ১০ম শতাব্দীর মধ্যে উমায়্যাদ শাসক আবদ আর-রহমান নির্মাণ করেন। ১৩শ শতকে খ্রিস্টান শাসক ফের্দিনান্দ তৃতীয় কর্দোভা পুনর্দখলের পর এটি ক্যাথেড্রালে রূপান্তরিত হয় এবং পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে নানা স্থাপত্য পরিবর্তন আনা হয়। ১৯৮৪ সালে ইউনেস্কো একে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করে।