
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও তথ্যপ্রাপ্তির স্বাধীনতা নিয়ে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) সম্প্রতি যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, নোয়াবের প্রকাশিত উদ্বেগ বাস্তবতা ও তথ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এবং তা বিভ্রান্তিকর।
প্রেস উইংয়ের দাবি, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কোনো গণমাধ্যমের সম্পাদকীয় বা প্রশাসনিক নীতিতে হস্তক্ষেপ করেনি। বরং গণমাধ্যমে সরকারবিরোধী বক্তব্য ও টকশোতেও সংযমের পরিচয় দিয়েছে। কোনো সংবাদমাধ্যমের সম্প্রচার বা নিবন্ধন বাতিল করা হয়নি, বরং পূর্ববর্তী সরকারের আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া কিছু গণমাধ্যম পুনরায় কার্যক্রম শুরু করার সুযোগ পেয়েছে।
সাংবাদিকদের তথ্যপ্রাপ্তি প্রসঙ্গে বলা হয়, উপদেষ্টামণ্ডলীর দপ্তরসমূহে সাংবাদিকদের সরাসরি প্রবেশাধিকার ছিল এবং সম্পাদকীয় অবস্থানের কারণে কাউকে ব্রিফিং বা সাক্ষাৎকার থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। অ্যাক্রেডিটেশন পদ্ধতির সংস্কারকে ঘিরে নোয়াবের সমালোচনাকেও ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছে প্রেস উইং। তাদের মতে, আগের ব্যবস্থাটি অনিয়মে ভরা ছিল, যেখানে অনেকে সাংবাদিক না হয়েও বিশেষ সুবিধা নিয়েছেন। বর্তমান অস্থায়ী পাস ব্যবস্থা প্রকৃত ও যোগ্য সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করেছে।
জানানো হয়, কিছু সাংবাদিক দায়িত্ব হারালেও তা সরকারের নির্দেশে হয়নি; বরং গণমাধ্যম মালিকদের নিজস্ব কৌশলগত পুনর্বিন্যাসের অংশ হিসেবে নেওয়া সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই বলেও দাবি করা হয়।
প্রেস উইং আরও জানায়, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য একটি ‘সাংবাদিক সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নের প্রস্তাবও বিবেচনায় রয়েছে, যা ভবিষ্যতে আইনি নিরাপত্তা জোরদার করবে এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ বা ‘সেলফ সেন্সরশিপ’ হ্রাসে সহায়ক হবে।
শেষ অংশে, সরকার গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানালেও, নোয়াবকে নিজ সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর— যেমন শ্রমিক অধিকার, নিরাপত্তাহীন কর্মপরিবেশ ও মজুরি বৈষম্যের— দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। প্রেস উইং মনে করে, বাস্তব তথ্যভিত্তিক উদ্বেগই গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সঠিকভাবে এগিয়ে নিতে পারে।