
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত অস্ত্র ত্যাগ করবে না বলে জানিয়েছে হামাস। সংগঠনটি তাদের অবস্থান জানিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলকে।
ইসরায়েলের সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার সময় হামাস অস্ত্র সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করতে রাজি হয়েছে—মার্কিন দূতের এমন মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। গোষ্ঠীটি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, যতদিন না ফিলিস্তিনিদের জাতীয় অধিকার ও পূর্ণ সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, ততদিন সশস্ত্র লড়াই অব্যাহত থাকবে। এই বক্তব্যে হামাস তাদের প্রতিরোধ সংগ্রামে অনড় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ সম্প্রতি ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় দাবি করেন, যুদ্ধবিরতি আলোচনার সময় হামাস নাকি ‘অস্ত্রত্যাগের জন্য প্রস্তুত’ বলে জানিয়েছে। ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ–এর প্রতিবেদনে এমন দাবি উঠে আসে।
তবে শনিবার (২ আগস্ট) এক বিবৃতিতে হামাস এই দাবিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, “যতক্ষণ ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অব্যাহত থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সশস্ত্র লড়াই জাতীয় দায়িত্ব ও বৈধ অধিকার হিসেবে চলবে।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “যতদিন না একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যার রাজধানী হবে জেরুজালেম, ততদিন এই লড়াই চলবে।”
হামাস আরও জানিয়েছে, উইটকফের গাজা সফর ছিল একটি “পরিকল্পিত প্রদর্শনী”—এর উদ্দেশ্য ছিল গাজার প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জনগণকে বিভ্রান্ত করা। সফরের একদিন পরই উইটকফ তেলআবিবে ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এদিকে, বিভিন্ন আরব দেশ, যেমন মিসর, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত হামাসকে গাজা নিয়ন্ত্রণ ছাড়ার এবং অস্ত্র পরিত্যাগের আহ্বান জানিয়ে আসছে। একই সময়ে ফ্রান্স ও কানাডা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি নির্দিষ্ট শর্তসমূহ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে তারাও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।
এই প্রেক্ষাপটে হামাসের বিবৃতি মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনায় জটিলতা বাড়াতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। তবে এটি ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্রীয় স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃঢ় সংকল্পকেও তুলে ধরে।