
গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনায় চার দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন পাঁচ জেলে। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত তাদের সঙ্গী বাকি ১০ জেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সমুদ্রে মাছ ধরতে এফবি সাগরকন্যা নামে একটি ট্রলার ১৫ জেলে নিয়ে পটুয়াখালীর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র মহিপুর থেকে বঙ্গোপসাগরে পাড়ি জমায়। শুক্রবার সকালে গভীর সমুদ্রে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় ট্রলারটি।
নিখোঁজ পাঁচ জেলে হলেন– মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের ইদ্রিস, কালাম, নজরুল ইসলাম, মাঝি আব্দুর রশিদ ও গিয়াস উদ্দিন। উদ্বিগ্ন স্বজনরা তাদের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে ছোটাছুটি করছেন। পরিবারগুলোয় চলছে হাহাকার।
অন্য জেলেদের সহযোগিতায় আজ পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া ১০ জেলে হলেন– কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের সাগর, রাজিব, ইব্রাহিম, মো. সাগর, রাহাত, হারুন, আলীপুরের হাসান আকন, বালিয়াতলীর হাসান, আমতলীর মহিষকাটার রফিক ও নোয়াখালীর হারুন। এর মধ্যে রাজিব, রফিক ও রাহাতের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
উদ্ধার হওয়া জেলে হাসান আকন জানান, শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে শেষ বয়ার ৭৫ কিলোমিটার গভীরে গিয়ে জাল ফেলার পর হঠাৎ ঝড় ও উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে তাদের ট্রলারটি দুমড়েমুচড়ে গিয়ে ডুবে যায়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একজন হারিয়ে যান। বাকি ১৪ জন বাঁশ ও ফ্লুটের সাহায্যে ভাসতে শুরু করলে দুই দফায় আরও পাঁচজন হারিয়ে যান। পরে তারা ভাসতে ভাসতে শেষ বয়া এলাকায় পৌঁছলে সোমবার গভীর রাতে মাছ ধরার দুটি ট্রলার দুই দফায় ৯ জনকে উদ্ধার করে। এদিকে, গতকাল সকালে কুয়াকাটাসংলগ্ন প্রায় ২০০ কিলোমিটার গভীর সাগর থেকে একজনকে উদ্ধার করা হয়।
নিখোঁজ জেলে ইদ্রিসের শ্বশুর মো. এমদাদুল বলেন, মেয়েজামাইর জন্য আমরা পরিবারের সবাই খুব দুশ্চিন্তায় আছি। এখনও তার কোনো সন্ধান পাচ্ছি না।
নিখোঁজ জেলে আব্দুর রশিদের ভাই ফয়েজ আলী জানান, ট্রলার নিয়ে তাদের তিন থেকে চার দিন পর ফেরার কথা ছিল। না আসায় আমরা বোট (ট্রলার) মালিকের কাছে যাই, তিনিও কিছু জানেন না। এখন যারা ফিরে এসেছেন তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বলছেন ট্রলারটি তলিয়ে যাওয়ার পর যে যা পেয়েছেন তা নিয়ে ভেসে ছিলেন। সমুদ্রের জোয়ার কাকে কোথায় নিয়ে গেছে কেউ বলতে পারে না।
মহিপুর থানার ওসি মাহমুদ হাসান বলেন, গত শনিবার ট্রলার মালিক উপজেলার লালুয়া এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী কিশোর হাওলাদার জেলে নিখোঁজ উল্লেখ করে একটি জিডি করেছেন। এখন পর্যন্ত ১০ জন উদ্ধার হয়েছেন। বাকিদের সন্ধানের চেষ্টা চালাচ্ছি।