
টঙ্গীতে বৃষ্টির পানিতে ঢেকে যাওয়া খোলা ম্যানহোলে পড়ে এক নারী নিখোঁজ হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে ২৮ জুলাই,২০২৫ তারিখে অফিস ছুটির সময়, যখন বৃষ্টির কারণে হাঁটু সমান পানিতে ডুবে ছিল রাস্তা।
দীর্ঘদিন ধরে ম্যানহোলটির ঢাকনা খোলা থাকলেও স্থানীয়দের অভিযোগ, সিটি কর্পোরেশন বিষয়টি নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বৃষ্টির পানিতে ম্যানহোল চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল না। ওই নারী প্রতিদিনের মতো বাসায় ফিরছিলেন, হঠাৎ করেই সেই খোলা ম্যানহোলে তলিয়ে যান।
একজন পথচারী দৌড়ে এসে উনাকে ধরতে চেয়েছিল কিন্তু বাঁচাতে পারেননি। এরপর ফায়ার সার্ভিস ও সিটি কর্পোরেশনের লোকজন ঘটনাস্থলে আসে। কিন্তু প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনও উদ্ধার হয়নি নিখোঁজ নারীর মরদেহ।
এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে, ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর দায়িত্ব এড়িয়ে বসে ছিল এবং পরবর্তীতে তাদের ডিউটি শেষের অজুহাত দেখিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সিটি কর্পোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস পরস্পরকে দোষারোপ করলেও উদ্ধার তৎপরতায় কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি।
নিখোঁজ নারীর পরিবার জানিয়েছে, তার দুই জমজ সন্তান আছে, বয়স মাত্র ৮ বছর। তাদের বাবা নেই, নানাও নেই, একেবারে নিঃস্ব এক পরিবার। মায়ের জন্যে এখনো রাত জেগে কাঁদছে ছোট্ট দুইটি শিশু। তারা আর কিছু চায় না, শুধু মায়ের লাশটা ফিরে পেতে চায়।
নিহতের এক আত্মীয় জানান, “আমরা কোনো বিচার চাই না, শুধু তার লাশটা চাই—এই শিশুদের চোখের পানি মুছানোর জন্যে।”
বৃষ্টি হলেই রাজধানী ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও অব্যবস্থাপনায় বারবার দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অথচ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা থেকে যায় একই রকম।
স্থানীয়রা বলছে, “যদি কোনো উচ্চপদস্থ ব্যক্তির আত্মীয় এমন দুর্ঘটনায় পড়তেন, তাহলে রাত জেগে উদ্ধার তৎপরতা চলতো, পুরো এলাকা ঘিরে অভিযান হতো। কিন্তু একজন সাধারণ নারীর জন্যে কেউ তেমন কিছু করছে না।”
সামাজিক মাধ্যমে এ ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মানুষ ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে বলছেন— কর্তৃপক্ষ যেন দায়িত্ব নেয় এবং অন্তত মায়ের মরদেহটি খুঁজে তার সন্তানদের কাছে ফেরত দিতে পারে।