ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনের অধিকার এই সরকারের নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ

আপলোড সময় : ২৮-০৭-২০২৫ ০৮:৩৭:৩২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৮-০৭-২০২৫ ০৮:৩৭:৩২ অপরাহ্ন

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, এমন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার এই অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই চুক্তি করা ন্যায়সংগত হয়নি।

সোমবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আয়োজনে ‘ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস সংক্রান্ত চুক্তিকে কেন্দ্র করে করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

 

 

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে যে মানবাধিকার পরিস্থিতি তার চেয়ে অনেক খারাপ পরিস্থিতি গাজায়। প্যালেস্টাইনে, আরাকানে বিভিন্ন জায়গায় মুসলমানদের ওপর অনেক অত্যাচার হচ্ছে। সেখানে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা দেখতে পাই না।

তিনি বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনা করা দরকার ছিল। এখানে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যু আছে। সেখানে মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে যদি দেশের অখণ্ডতা ক্ষুণ্ন হয়, সেটিও আমাদের চিন্তা করতে হবে।

 

 

বৃহৎ রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের মিশন স্থাপনের চুক্তি হলে বিতর্ক তৈরি হতো না বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন আহমদ।

তিনি বলেন, তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক যে অফিস স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তা রিভিউ করার একটা সময়সীমা আছে। সম্ভবত এক বছর বা দুই বছর পর তা রিভিউ হবে। তিন বছর পর সেটা রিনিউ করবে কি না, তা পরবর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। অন্তর্বর্তী সরকার যেন সবকিছু যাচাই-বাছাই করে এই মিশন স্থাপনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে সে ব্যাপারে তিনি পরামর্শ দেবেন জানান।

ঢাকায় জাতিসংঘের নতুন আবাসিক প্রতিনিধি নিয়োগ নিয়ে একটি ‘সাংঘাতিক’ খবর আছে বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, তাঁরা শুনতে পেয়েছেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের বর্তমান আবাসিক প্রতিনিধির মেয়াদ শেষের দিকে। তাঁর স্থলে যিনি আসবেন, তাঁর ব্যাপারে তাঁরা কিছু আপত্তিকর কথা শুনেছেন। হয়তো বাংলাদেশ সরকার তাঁকে অনুমতি দেওয়ার আগে বিষয়টি বিবেচনায় নেবে। তিনি এর বেশি খোলাসা করে বলতে চান না। কারণ, বিষয়টি স্পর্শকাতর। অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের নতুন আবাসিক প্রতিনিধিকে অনুমোদন দেওয়ার আগে যাতে তাঁর বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়, সে আহ্বান জানান তিনি।

 

 

 

আলোচনায় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। তাদের সঙ্গে বৈঠকে সবার গৃহীত সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেবো। তবে দেশ ও ইসলামের স্বার্থে আমরা কারও মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারবো না। এক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদের জন্মদাতা ও আশ্রয়দাতা রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রকেও বিবেচনায় রাখা হবে।

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, অবস্থা এমন যে পুলিশ ঘুষ খায়, আবার ঘরে চুরি হলে পুলিশকেই ফোন করতে হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের মিশন স্থাপনের বিষয়টিও একইরকম। সরকার ভারতীয় অপপ্রচার ঠেকাতে এমন মিশন আনতে চাইছে বলে তাঁদের জানিয়েছে। সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই চুক্তি করে অন্যায় করেছে। তবে এখন আমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। আমরা যে চুক্তি দেবো এর নীতিমালার বাইরে যদি মানবাধিকার কমিশন কাজ করে তবে আমরা রাজপথে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবো।

অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুততার সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের মিশন স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

 

 

 

তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো মানবাধিকার শব্দকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বিভিন্ন সময় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই মিশন স্থাপিত হলে বিপদ আরও ঘনীভূত হবে। তাঁরা এই মিশন নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কথাও বলছে না।

গোলটেবিল বৈঠকে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাজেদুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাহফুজুল হক, সালাউদ্দিন নানুপুরী, আহমদ আলী, মহিউদ্দিন রাব্বানী, মীর মোহাম্মদ ইদ্রিস, ফজলুল করিম, সাখাওয়াত হোসেন রাজি, সহকারী মহাসচিব মুসা বিন, আতাউল্লা আমিন, ইজহার, জাতীয় ওলামা মাশায়েখের মহাসচিব রেজাউল করিম, সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল হক প্রমুখ।

সম্পাদকীয় :

লাইসেন্স নং: TRAD/DNCC/013106/2024 বার্তা বিভাগ: [email protected] অফিস: [email protected]

অফিস :

যোগাযোগ: মিরপুর, শেওড়াপাড়া হটলাইন: 09638001009 চাকুরী: [email protected]