নির্বাচনে ফায়দা লুটতে আসামের বাংলাভাষী মুসলিমদের উচ্ছেদ করছে বিজেপি

আপলোড সময় : ২৮-০৭-২০২৫ ০৩:৫১:০৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৮-০৭-২০২৫ ০৩:৫১:০৫ অপরাহ্ন
আসামে বাংলাভাষী মুসলিমদের উচ্ছেদ অভিযান জোরদার করেছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। রাজ্যটিতে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে স্থানীয় সংস্কৃতি ও ভোটব্যাংক রক্ষার অজুহাতে শত শত পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। শুধু বাড়িঘর থেকেই নয়, বহু বাসিন্দার ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি বলছে, এরা বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী। তবে ভুক্তভোগীরা বলছেন, তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আসামেই বসবাস করছেন।
 
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত বছর শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ভারত সরকার এ অভিযান আরও জোরালোভাবে শুরু করেছে। আসামে বসবাসকারী মুসলিমদের বড় একটি অংশ বাংলাভাষী হওয়ায় তাদেরই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
 
আসামের গোয়ালপাড়া জেলার বাসিন্দা ৫৩ বছর বয়সী আরান আলী রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা এই মাটির সন্তান। আমাদের জন্মও এখানেই। তবুও আমাদেরকে বিদেশি অনুপ্রবেশকারী আখ্যা দিয়ে ঘরছাড়া করা হয়েছে। এখন তিন সদস্যের পরিবার নিয়ে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছি।’
 
রিপোর্টে আরও বলা হয়, আসামের সঙ্গে বাংলাদেশের ২৬২ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যটিতে বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বৈরিতা তৈরি করা হয়েছে। এদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ থাকলেও বিজেপি মূলত মুসলিমদের লক্ষ্য করে নীতিমালা চালু করছে। দলটির আশঙ্কা, বাংলাভাষীরা স্থানীয় সংস্কৃতি ও অর্থনীতির ওপর প্রভাব বিস্তার করছে—যা রাজনীতিতে হিন্দুত্ববাদী দলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
 
এই অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এক্স (সাবেক টুইটার)–এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম অনুপ্রবেশকারীরা ভারতের জাতীয় পরিচয়ের জন্য হুমকি। আমরা নির্ভীকভাবে সীমান্ত থেকে তাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কাজ করছি।’
 
সাম্প্রতিক এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, আসামের কয়েকটি জেলায় হিন্দুরা নিজেদের ভূমিতেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। তার ভাষ্যমতে, ২০১১ সালের আদমশুমারিতে রাজ্যের জনসংখ্যা ছিল ৩ কোটি ১০ লাখ, যার মধ্যে ৩০ শতাংশ মুসলিম। আর আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এ হার ৫০ শতাংশে পৌঁছাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
 
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসামে এই উচ্ছেদ অভিযান শুধুই সীমান্তনির্ভর নিরাপত্তা প্রশ্ন নয়, বরং আসন্ন নির্বাচনের আগে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী প্রচারের অংশ। উচ্ছেদ অভিযানের পেছনে কার্যত রাজনীতিকরণ এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শনের কৌশলই লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সম্পাদকীয় :

লাইসেন্স নং: TRAD/DNCC/013106/2024 বার্তা বিভাগ: [email protected] অফিস: [email protected]

অফিস :

যোগাযোগ: মিরপুর, শেওড়াপাড়া হটলাইন: 09638001009 চাকুরী: [email protected]