
মীরসরাই উপজেলার ৮৫টি উচ্চ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার তদারকি কর্তৃপক্ষ তথা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদ গত ৪ মাস ধরে চলেছে অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে। পাশ্ববর্তী সীতাকুণ্ড উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তফা সরকার গত এপ্রিল থেকে মীরসরাই উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছিলেন। এমতাবস্থায় মাসে একবারও মীরসরাই উপজেলায় আসেননি তিনি। বিগত ৪ মাসে মাত্র ১টি বিদ্যালয় ভিজিট করেছেন তিনি। অথচ এর পূর্বে মাসে অন্তত ২০–৩০টি বিদ্যালয় ভিজিট হতো। মুঠোফোন যোগাযোগ বা সীতাকুণ্ড গিয়ে অনেকে প্রয়োজনীয় কাজ সেরেছেন। কিন্তু গত ২৪ জুলাই থেকে তিনিও অবসরে গিয়েছেন। এখন থেকে চট্টগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার উত্তম খিশা মীরসরাই উপজেলার সকল বিদ্যালয়ের তদারকির ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করবেন বলে শিক্ষা বিভাগ থেকে জানা গেছে। আবার অনেক বিদ্যালয়ে শূন্যপদের জন্য ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এ অবস্থা চলমান থাকলে মাধ্যমিক শিক্ষায় নেমে আসতে পারে বিপর্যয়–এমন আশঙ্কা সচেতন মহলের।
উপজেলার সরকারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিত দে বলেন, আমার বিদ্যালয়ে বৌদ্ধ ধর্মীয় শিক্ষার্থী রয়েছে ৯০ জন। অথচ ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও উক্ত বিষয়ে শিক্ষক পাবার নীতিমালা রয়েছে কিন্তু আমার এই শূন্যপদ পূরণে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। এছাড়া নেই চারুকারু শিক্ষক। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতোপূর্বে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নিজেই এসে আমাদের কোন সমস্যা থাকলে তা সমাধানের উদ্যোগ নিতেন। গত এপ্রিল থেকে অফিসার না থাকায় সমস্যা সমাধানে সীতাকুণ্ড যেতে হবে বলে সমাধান না করে থাকতে হয়েছে। এখন তো সেই সূদুর চট্টগ্রামে যেতে হবে যা আরো কষ্টকর হবে। মীরসরাই উপজেলায় একজন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নিয়োগ খুবই জরুরি।
মিঠাছরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামশেদ আলম বলেন, আমাদের উপজেলা চট্টগ্রামের একটি সর্ববৃহৎ উপজেলা, তাই একজন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পাশে থাকলে আমাদের সকল কার্যক্রম এবং নিজেদের নিয়ম শৃঙ্খলায় তৎপর হতে সহজতর হয়।
এদিকে মীরসরাই মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলায় বর্তমানে ৮৫টি চারুকারু শিক্ষক পদই শূন্য। আইসিটি শিক্ষকও নেই প্রায় ৪০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। জয়পুর পূর্ব জোয়ার ও কমরআলী উচ্চ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। সর্বমোট ১২৭টি শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। খোদ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসই চলছে একজন সহকারী আর একজন হিসাবরক্ষক দিয়ে।
সদ্য অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা মোস্তফা সরকার বলেন, এতোদিন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করলেও আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি মীরসরাই উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষার সকল বিষয়াদি মনিটরিং করার।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার উত্তম খিশা বলেন, নতুন নিয়োগ এখনো না হওয়ায় আমাদের শূন্যপদ হয়েছে দেশের অনেক স্থানেই। তবুও আমি চেষ্টা করবো মীরসরাই উপজেলায় একজন ভালো শিক্ষা অফিসার আনার জন্য। ততোদিন পর্যন্ত উক্ত উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় যেন ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে তিনি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাসচেতন ব্যক্তিগণের সহযোগিতা কামনা করেন।