মূল্যস্ফীতি নিয়ে সুসংবাদ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতির হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

গভর্নর বলেন, আমাদের লক্ষ্য আগামী জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা। আমরা আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে এটিকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনবো। আমরা এ লক্ষ্যে বিভিন্ন নীতিগত ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করছি। শনিবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতির হার ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ থেকে কিছুটা বেড়ে নভেম্বর মাসে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই বৃদ্ধি প্রধানত খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে হয়েছে, যা অক্টোবরের ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে বেড়ে নভেম্বরে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ হয়েছে। এছাড়া খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার নভেম্বরে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশে পৌঁছেছে, যা অক্টোবরে ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বন্যার কারণে প্রায় সারাদেশে খাদ্যশস্য ও সবজির উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে সবজি ও খাদ্যদ্রব্যের দাম চড়া। এটা শিগগিরই নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারলে আমরা ব্যাংকের সুদের হার এবং নীতির হার কমিয়ে আনবো।

তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে। মূল্যস্ফীতি একটি কাঙ্ক্ষিত স্তরে নামিয়ে আনতে কমপক্ষে ১২ মাস সময় লাগে। সুতরাং আমাদের সেই নির্দিষ্ট সময়টা দিতে হবে।

গভর্নর বলেন, যদিও মুদ্রানীতি কঠোর করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ঋণ নিয়ন্ত্রণেও রাজস্ব ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি এখনো কমেনি।

ড. আহসান এইচ মনসুর আরো বলেন, আমরা এরই মধ্যে মুদ্রানীতি অত্যন্ত কঠোর করেছি। নীতি হার বাড়িয়েছি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। জানুয়ারির তথ্য না আসা পর্যন্ত আমি দেখব। এ পর্যন্ত এটি হতাশাজনক ছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, বিগত সরকার তথ্য-উপাত্তে হেরফের করেছে বলে দুটি কারণে এমন হয়েছে। এখন আর কোনো বাধা নেই। সুতরাং, গত বছর কম ছিল, এই বছরটি বাস্তব এবং আমরা এই সময় অর্থনৈতিক নীতি কঠোর করার প্রক্রিয়াগুলোতে অর্থনীতির প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। এছাড়া মুদ্রানীতি কঠোর করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উপর মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সাহায্য করার জন্য পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল এবং চিনির মতো প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের আমদানি শুল্কও প্রত্যাহার করেছে সরকার।