ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
কাতারের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অসম্মান দেখানো হয়েছে: নারী অধিকার আন্দোলন সংবাদপত্র প্রকাশে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের আহ্বান তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মেজর সিনহা হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত চাঁদপুর পৌরসভার তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টি হতে পারে দেশের ৬ বিভাগে টানা তিন দফায় স্বর্ণের দাম বাড়ল ১০ হাজার টাকার বেশি নোয়াখালীতে এসএসসি পরীক্ষায় দায়িত্বে অবহেলা, ১২ শিক্ষককে অব্যাহতি বরগুনার সড়ক ও মহাসড়কে টোল আদায় বন্ধের নির্দেশ আদালতের চবির চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে ১১শ কোটি টাকার ডিজেল

ভারত থেকে ১১শ কোটির বেশি টাকা দামের জ্বালানি তেল আমদানি করা হচ্ছে। চলতি মাস থেকেই এই তেল আসা শুরু হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মোট ১ লাখ ৩০ হাজার টন ডিজেল ভারত থেকে দেশে পৌঁছাবে।

 

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশের জ্বালানি তেলের প্রায় পুরোটাই আমদানি নির্ভর। বর্তমানে দেশে বছরে ৭০ লাখ টনের বেশি জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। চলতি বছরে চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৪ লাখ লিটার। এর মধ্যে দেশে কিছু তেল উৎপাদিত হলেও বাকি তেলের পুরোটা বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশ ১৩/১৪ লাখ টন ক্রুড অয়েল আমদানি করে। আমদানিকৃত ক্রুড অয়েল ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করে বাজারজাত করা হয়। এর বাইরে চাহিদার বাকি তেল পরিশোধিত অবস্থায় আমদানি করা হয়। জ্বালানি তেলের চাহিদার বেশিরভাগ ডিজেল। চলতি বছর ডিজেলের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৬ লাখ টন। দেশের প্রয়োজনীয় ডিজেলের ৮০ শতাংশ পরিশোধিত অবস্থায় আমদানি করা হয়। ইস্টার্ন রিফাইনারি থেকে বাকি ডিজেলের চাহিদা মেটানো হয়।

 

বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে পরিশোধিত এবং অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। ২০১৬ সাল থেকে ভারত থেকে পরিশোধিত অবস্থায় ডিজেল আমদানি করে আসছে। শুরুতে ট্রেনের ওয়াগনে সীমিত পরিমাণে তেল আমদানি করা হলেও পরে ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বিপিসি রেলহেড ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ইন্দো–বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফপি) স্থাপন করা হয়। বার্ষিক ১০ লাখ টন ডিজেল পরিবহনের সক্ষমতাসম্পন্ন এই পাইপলাইন নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছিল ৩৭৭ কোটি রুপি। ভারত এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছিল। শিলিগুড়ি সীমান্তের অদূরে অবস্থিত নুমালিগড় রিফাইনারি থেকে পার্বতীপুর ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত পাইপলাইনের মাত্র ৫ কিলোমিটার পাইপলাইন রয়েছে ভারতে। বাকি ১২৬ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার বাংলাদেশে।

 

২০২৩ সালের ১৮ মার্চ এই পাইপলাইন উদ্বোধন করা হয়। পাইপলাইন তৈরির পর ভারত থেকে ডিজেল আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। গত বছর ভারত থেকে এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ৭০ হাজার ৫৫ টন ডিজেল আমদানি করা হয়। চলতি বছর যা ১ লাখ ৩০ হাজার টনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

বিপিসি সূত্র জানায়, বিপিসির হাজারতম বোর্ড সভায় গত রোববার ডিজেল আমদানির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। চলতি মাসে এই তেলের প্রথম চালান পার্বতীপুর ডিপোতে পৌঁছাবে উল্লেখ করে সূত্র বলেছে, পার্বতীপুর গুরুত্বপূর্ণ একটি ডিপো। এই ডিপো থেকে উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় ডিজেল সরবরাহ করা হয়। এই তেলের অধিকাংশ শস্যভান্ডারখ্যাত উত্তরাঞ্চলের কৃষিতে সেচ কাজে ব্যবহৃত হয়।

 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া গতকাল সংবাদটি প্রকাশ করেছে। ‘ডেসপাইট টেনশনস, বাংলাদেশে টু কন্টিনিউ টু ইমপোর্ট ডিজেল ফ্রম ইন্ডিয়া’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত রোববার বিপিসি পরিচালনা পর্ষদের হাজারতম সভায় ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টন ডিজেল আমদানির সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে খরচ হবে ১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এই ডিজেল আমদানি করা হবে।

 

এর আগে খাদ্য মন্ত্রণালয় ভারত থেকে প্রায় ২৮৩ কোটি টাকায় ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চাল আমদানি করে। যার প্রথম চালান চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে।

জনপ্রিয়

কাতারের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে ১১শ কোটি টাকার ডিজেল

প্রকাশিত: ০৫:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

ভারত থেকে ১১শ কোটির বেশি টাকা দামের জ্বালানি তেল আমদানি করা হচ্ছে। চলতি মাস থেকেই এই তেল আসা শুরু হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মোট ১ লাখ ৩০ হাজার টন ডিজেল ভারত থেকে দেশে পৌঁছাবে।

 

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশের জ্বালানি তেলের প্রায় পুরোটাই আমদানি নির্ভর। বর্তমানে দেশে বছরে ৭০ লাখ টনের বেশি জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। চলতি বছরে চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৪ লাখ লিটার। এর মধ্যে দেশে কিছু তেল উৎপাদিত হলেও বাকি তেলের পুরোটা বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশ ১৩/১৪ লাখ টন ক্রুড অয়েল আমদানি করে। আমদানিকৃত ক্রুড অয়েল ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করে বাজারজাত করা হয়। এর বাইরে চাহিদার বাকি তেল পরিশোধিত অবস্থায় আমদানি করা হয়। জ্বালানি তেলের চাহিদার বেশিরভাগ ডিজেল। চলতি বছর ডিজেলের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৬ লাখ টন। দেশের প্রয়োজনীয় ডিজেলের ৮০ শতাংশ পরিশোধিত অবস্থায় আমদানি করা হয়। ইস্টার্ন রিফাইনারি থেকে বাকি ডিজেলের চাহিদা মেটানো হয়।

 

বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে পরিশোধিত এবং অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। ২০১৬ সাল থেকে ভারত থেকে পরিশোধিত অবস্থায় ডিজেল আমদানি করে আসছে। শুরুতে ট্রেনের ওয়াগনে সীমিত পরিমাণে তেল আমদানি করা হলেও পরে ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বিপিসি রেলহেড ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ইন্দো–বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিএফপি) স্থাপন করা হয়। বার্ষিক ১০ লাখ টন ডিজেল পরিবহনের সক্ষমতাসম্পন্ন এই পাইপলাইন নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছিল ৩৭৭ কোটি রুপি। ভারত এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছিল। শিলিগুড়ি সীমান্তের অদূরে অবস্থিত নুমালিগড় রিফাইনারি থেকে পার্বতীপুর ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত পাইপলাইনের মাত্র ৫ কিলোমিটার পাইপলাইন রয়েছে ভারতে। বাকি ১২৬ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার বাংলাদেশে।

 

২০২৩ সালের ১৮ মার্চ এই পাইপলাইন উদ্বোধন করা হয়। পাইপলাইন তৈরির পর ভারত থেকে ডিজেল আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। গত বছর ভারত থেকে এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ৭০ হাজার ৫৫ টন ডিজেল আমদানি করা হয়। চলতি বছর যা ১ লাখ ৩০ হাজার টনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

বিপিসি সূত্র জানায়, বিপিসির হাজারতম বোর্ড সভায় গত রোববার ডিজেল আমদানির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। চলতি মাসে এই তেলের প্রথম চালান পার্বতীপুর ডিপোতে পৌঁছাবে উল্লেখ করে সূত্র বলেছে, পার্বতীপুর গুরুত্বপূর্ণ একটি ডিপো। এই ডিপো থেকে উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় ডিজেল সরবরাহ করা হয়। এই তেলের অধিকাংশ শস্যভান্ডারখ্যাত উত্তরাঞ্চলের কৃষিতে সেচ কাজে ব্যবহৃত হয়।

 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া গতকাল সংবাদটি প্রকাশ করেছে। ‘ডেসপাইট টেনশনস, বাংলাদেশে টু কন্টিনিউ টু ইমপোর্ট ডিজেল ফ্রম ইন্ডিয়া’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত রোববার বিপিসি পরিচালনা পর্ষদের হাজারতম সভায় ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টন ডিজেল আমদানির সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে খরচ হবে ১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এই ডিজেল আমদানি করা হবে।

 

এর আগে খাদ্য মন্ত্রণালয় ভারত থেকে প্রায় ২৮৩ কোটি টাকায় ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চাল আমদানি করে। যার প্রথম চালান চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে।