দিন যতই ব্যস্ততায় ভরে উঠুক না কেন, অন্তরের প্রশান্তি ও আত্মার শুদ্ধতার জন্য প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব অপরিসীম—এমনটাই মত দিচ্ছেন আলেম-ওলামা ও ইসলামি চিন্তাবিদরা। তাঁদের মতে, কুরআন তিলাওয়াত কেবল ইবাদত নয়, বরং এটি একটি আত্মিক চর্চা, যা একজন মুসলমানের মন ও মস্তিষ্ককে আলোকিত করে।
আল-কুরআন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নাজিলকৃত সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এর প্রতিটি শব্দ হিদায়াত, প্রতিটি আয়াত জীবনঘনিষ্ঠ বার্তা বহন করে।
আল্লাহ তাআলা বলেন—
“হে মানবজাতি! তোমাদের প্রতি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে, যা অন্তরের ব্যাধির জন্য শিফা, এবং মু’মিনদের জন্য পথনির্দেশ ও রহমত।”
— (সুরা ইউনুস, আয়াত ৫৭)
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন মাত্র কয়েক আয়াত হলেও কুরআনের তিলাওয়াত একজন মানুষের চিন্তাজগতে শুদ্ধতা আনে। পাশাপাশি এটি একজন ব্যক্তিকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যা দুনিয়ার ঝামেলা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকার একটি কার্যকর পন্থা।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন—
“তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি, যে কুরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়।”
— (বুখারী)
তিলাওয়াতের সময় কুরআনের সুর অন্তরে ছুঁয়ে যায়, চোখে অশ্রু আনে, হৃদয়ে প্রশান্তি দেয়। যেসব মানুষ প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করেন, তারা বলেন— এটি শুধু ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, বরং এটি এক ধরনের মানসিক প্রশান্তির উৎস।
আরেকটি হাদীসে রাসূল (সা.) বলেন—
“তোমরা কুরআন পাঠ করো, কারণ এটি কিয়ামতের দিন তোমাদের জন্য সুপারিশকারী হবে।”
— (সহীহ মুসলিম)
ইসলামী স্কলাররা মনে করেন, কুরআন তিলাওয়াত যত নিয়মিত হয়, জীবনের প্রতিটি কাজে তত বেশি বরকত নেমে আসে। এর মাধ্যমে একজন মানুষ নিজের খারাপ অভ্যাস থেকে ফিরে আসতে পারেন, হৃদয়ে আল্লাহর ভয় গড়ে ওঠে এবং তাকওয়া বৃদ্ধি পায়।
তাঁদের মতে, প্রতিদিন কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখলে একজন মুসলমান আল্লাহর পথে পরিচালিত হন, এবং কঠিন সময়েও ভেঙে না পড়ে শক্তি ও স্থিরতা লাভ করেন।
অতএব, কুরআন তিলাওয়াত কেবল ধর্মীয় অনুশীলন নয়, এটি আত্মিক প্রশান্তি, জীবনের গঠনমূলক দিকনির্দেশ এবং অফুরন্ত সওয়াবের এক স্থায়ী উৎস।