সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে এক বিবৃতি দিয়েছেন। ট্রাম্প সম্প্রতি অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে তাঁর বিজয়ের পর ওবামা ‘রাশিয়ার হস্তক্ষেপের প্রমাণ বানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একটি ক্যু বা বিদ্রোহ পরিচালনার চেষ্টা করেছিলেন’। ওবামার দপ্তর এই অভিযোগকে ‘উত্তেজক ও বিভ্রান্তিকর’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ওবামার কার্যালয় জানায়, ‘আমরা সাধারণত প্রেসিডেন্টের দপ্তরের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে হোয়াইট হাউস থেকে আসা প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের উত্তর দিই না। তবে এই অভিযোগ এতটাই হাস্যকর ও বিপজ্জনক, প্রতিক্রিয়া দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ট্রাম্পের অভিযোগে যেসব তথাকথিত প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলোর ভিত্তি ১১ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন, যা গত সপ্তাহে ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স তুলসী গ্যাবার্ড প্রকাশ করেন। ওই প্রতিবেদনে ওবামা প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহমূলক ষড়যন্ত্র’ চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া বিচার বিভাগের কাছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
কিন্তু ওবামার কার্যালয় জবাবে বলেছে, এই প্রতিবেদন কোনোভাবেই ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারের ব্যাপারে প্রচলিত বিশ্লেষণকে অস্বীকার করে না। মার্কিন সিনেটের দ্বিদলীয় গোয়েন্দা কমিটির ২০২০ সালের একটি প্রতিবেদনের কথাও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। যেখানে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়টি পুনরায় নিশ্চিত করা হয়েছিল।
ট্রাম্প এই অভিযোগ তুলেছিলেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের সঙ্গে বৈঠকের সময়। তিনি বলেন, ‘ওই দলে অন্যরাও ছিল, তবে দলনেতা ছিলেন প্রেসিডেন্ট ওবামা, বারাক হুসেইন ওবামা। আপনি তাঁর নাম শুনেছেন তো?’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা অকাট্য প্রমাণ যে ওবামা রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কাজ করেছেন, তিনি একটি বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিতে চেয়েছিলেন। এটা হিলারি ক্লিনটনসহ অন্যদের সঙ্গে করা হয়েছিল, কিন্তু নেতৃত্বে ছিলেন ওবামা। ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি দোষী। এটা ছিল রাষ্ট্রদ্রোহ। তারা নির্বাচন চুরি করতে চেয়েছিল। তারা এমন সব কাজ করেছে, যা কেউ কল্পনাও করতে পারে না।’
তবে গোয়েন্দা বিশ্লেষক ফাল্টন আর্মস্ট্রং বলেছেন, গ্যাবার্ডের প্রতিবেদনটি ‘পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করতে বানানো।’ তাঁর ভাষায়, ‘এটি বিভ্রান্তিকর, অপেশাদার এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লেখা।’ এমন প্রেক্ষাপটে ওবামা মুখ খোলায় এটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নজিরবিহীন এক রাজনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।