ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫ , ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রাজনৈতিক দলকে বাস সহায়তার দাবি মিথ্যা: আইএসপিআর কোটালীপাড়ায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে আওয়ামী লীগের দেড় হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ইউটিউবের নতুন নিয়ম: ১৬ বছরের কম বয়সীরা একা লাইভ স্ট্রিম করতে পারবে না টনসিল ইনফেকশনের লক্ষণ, কারণ ও করণীয় জেনে নিন! নির্ধারিত সময়েই সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বাংলাদেশে মানবাধিকার মিশন স্থাপনে সরকার ও জাতিসংঘের মধ্যে সমঝোতা বাংলাদেশে মানবাধিকার মিশন স্থাপনে জাতিসংঘের সঙ্গে সরকারের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের চুক্তি বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি হেফাজতের আরেকটা লড়াই হবে, সেই লড়াইয়েও আমরা জয়লাভ করব: জামায়াত আমির আমার ভিজিট আমৃত্যু ৩০০ টাকাই থাকবে: নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এজাজুল ইসলাম এসএসসি ফল পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে জামায়াতের সমাবেশে সারজিস সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ ২০২৫ ২০ জুলাই দেশব্যাপী সর্বাত্মক হরতালের ডাক নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ চার সংগঠনের নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের কার্যক্রম শুরু ভুয়া তথ্য দিলে আজীবন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা: ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের সতর্কবার্তা আওয়ামী লীগ তওবার সুযোগও হারিয়েছে: এনসিপি নেতা হাসনাত দেশে অপরাধের মাত্রা কমছে না: ধর্ম উপদেষ্টা সাবেক এমপি আব্দুল মান্নান তালুকদার আর নেই বর্ষায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ভৈরবের নৌকা কারিগররা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ১৭ কারাগারে বিদ্রোহ ও হামলা

  • আপলোড সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০৭:৫৪:৪৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০৭:৫৪:৪৯ পূর্বাহ্ন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ১৭ কারাগারে বিদ্রোহ ও হামলা ছবি: সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময়ে গত বছর জুলাই-আগস্ট মাসে দেশের ১৭টি কারাগারে বাইরে থেকে হামলা ও বন্দিদের বিদ্রোহের নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় সন্ত্রাসী থেকে শুরু করে সব শ্রেণির বন্দিরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে কারারক্ষীরা গুলিও চালান। এতে গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি ও জামালপুর কারাগারে ১৩ জন বন্দি নিহত হন। ১৭টি কারাগারে আহত হন ২৮২ জন কারারক্ষী।
 
ওই সময়ে পাঁচটি কারাগার থেকে দুই হাজারের বেশি বন্দি পালিয়ে যান। পরে পালিয়ে যাওয়া অনেক বন্দি কারাগারে ফিরে আসেন। আবার অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ওই ঘটনার পর এক বছর পার হলেও এখনো পালিয়ে যাওয়া ৭০০ বন্দিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
 
পালিয়ে যাওয়া এসব বন্দির মধ্যে হলি আর্টিজানে হামলাকারীসহ ৯ জন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীও রয়েছেন।
হামলা ও বিদ্রোহের ঘটনার পর দেশের সব কারাগারে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বন্দিদের পালিয়ে যাওয়া রোধ করতে দেশের সব কারাগারের সীমানাপ্রাচীর আরো উঁচু করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। কারাগার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
 
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত বছর জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ছিল উত্তাল। এর মধ্যে গত বছর ১৯ জুলাই নরসিংদী কারাগারে বাইরে থেকে হামলা ও কারা বিদ্রোহের ঘটনায় পালিয়ে যায় ৮২৬ জন বন্দি। এরপর ওই বছরের ৫ আগস্ট বিটিভিতে শেখ হাসিনার দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সংবাদ দেখে বেশ কিছু কারাগার থেকে বন্দিরা পালাতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর ৬ থেকে ৮ আগস্ট সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, শেরপুর ও গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার এই চারটি কারাগার থেকে আরো প্রায় বারো শ বন্দি পালিয়ে যান। ওই সময়ে কারাগার থেকে অস্ত্র, গোলা-বারুদ থেকে শুরু করে চাল-ডাল পর্যন্ত লুট করা হয়।
 
কারা সূত্র জানায়, আন্দোলনের সময় হামলা ও বিক্ষোভের ঘটনায় ১৭টি কারাগারের মধ্যে আটটি কারাগার যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর পাঁচটি কারাগার থেকে দুই হাজারের বেশি বন্দি পালিয়ে যান।
 
পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে জঙ্গি ও মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ৯৮ জন বন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী ছিলেন ৯ জন। এ ছাড়া এখনো ৭০ জনের মতো বিচারাধীন সন্ত্রাসী পলাতক রয়েছেন। এ ছাড়া খোয়া যাওয়া ৯২টি অস্ত্রের মধ্যে এ পর্যন্ত ৬৫টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো উদ্ধারের বাইরে রয়েছে ২৭টি। আন্দোলনের সময় বিভিন্ন কারাগারে বিশৃঙ্খলায় ২৮২ জন কারারক্ষী আহত হন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখনো ৭০০ জন বন্দি পলাতক রয়েছেন বলে গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন।
 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছর ১৯ জুলাই প্রথম নরসিংদী কারাগারে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ওই সময় পাঁচজন কারারক্ষী আহত হন। ঘটনার পর অনেক বন্দি আবার কারাগারে ফিরে আসেন। কিন্তু দুই দিন পর্যন্ত তাঁদের কারাগারে নিয়ে রাখার মতো অবস্থা ছিল না।
 
এ ঘটনার পর ওই বছর ২৩ জুলাই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কারাগারটি পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের জানান, নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে ছিনিয়ে নেওয়া জঙ্গিদের আবারও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
 
তিনি বলেন, ‘নরসিংদী কারাগারে অস্ত্রাগার লুট করা হয়েছে। যেসব সন্ত্রাসী দেশের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল, পুলিশ বাহিনী যাদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আটক করেছিল। এর মধ্যে এখানে ৯ জন ছিল। তারাও পালিয়ে গেছে। যেসব জঙ্গি পালিয়েছে, তারা অত্যন্ত ভয়ংকর ছিল। দুজন নারী জঙ্গিও পালিয়েছে।’
 
সূত্র মতে, কারাগারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে কাশিমপুর ও জামালপুর কারাগারে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এ পরিস্থিতির মধ্যে ৮ আগস্ট গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে বিদ্রোহ করেন বন্দিরা। তাঁরা গেট ভেঙে ও দেয়াল টপকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাধ্য হয়ে দেয়াল টপকাতে যাওয়া বন্দিদের ওপর কারারক্ষীরা গুলি চালান। ওই দিন গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হন। এর পরও কারাগারটি থেকে ২০৯ বন্দি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
 
একই দিন দুপুরে জামালপুর কারাগারের ভেতর বন্দিরা বিদ্রোহ শুরু করেন। এক পর্যায়ে বন্দিদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারারক্ষীরা গুলি চালালে এই কারাগারে সাত বন্দির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জেলার ও তিন কারারক্ষীসহ আরো ১৯ জন আহত হন।
 
৭ আগস্ট কুষ্টিয়া জেলা কারাগার ফটকের তালা ভেঙে শতাধিক বন্দি পালিয়ে যান। বন্দিদের মারধরে অন্তত ২৫ কারারক্ষী আহত হন।
 
অন্যদিকে ৭ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে আটক হওয়া আসামিরা রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশে সিরাজগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার সময় অন্য বন্দিরাও মুক্ত হওয়ার জন্য কারা অভ্যন্তরে বিক্ষোভ শুরু করেন, যা ছিল নজিরবিহীন ঘটনা।
 
হাই সিকিউরিটি কারাগারে যা ঘটেছিল:
 
জানা গেছে, গত বছর ৬ আগস্ট সকালে নানা অনিয়ম ও বন্দিদের মারধরের অভিযোগ তুলে এবং মুক্তির দাবিতে কয়েক শ বন্দি বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে কারারক্ষীদের জিম্মি করেন তাঁরা। কারারক্ষীরা তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে বন্দিরা দেয়াল টপকে বেরিয়ে যেতে থাকেন। তখন কারারক্ষীরা গুলি চালান। এতে ছয় বন্দি নিহত হন।
 
যা ঘটেছিল জামালপুর কারাগারে:
 
গত বছর ৮ আগস্ট দুপুর ২টার পর জামালপুর জেলা কারাগারে থাকা বন্দিরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে মারামারি শুরু করেন। তাঁদের একটি পক্ষ মুক্তির জন্য বিদ্রোহ করে। ওই সময় কারারক্ষীদের ওপর আক্রমণ করেন তাঁরা। এক পর্যায়ে তাঁরা কারাগারে আগুন দেন। কারাগারের একটি গেটও ভেঙে ফেলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারারক্ষীরা গুলি চালালে সাতজন নিহত হন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : স্টাফ রিপোর্টার, ডেস্ক-০২

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
টনসিল ইনফেকশনের লক্ষণ, কারণ ও করণীয় জেনে নিন!

টনসিল ইনফেকশনের লক্ষণ, কারণ ও করণীয় জেনে নিন!