কিন্তু দায়িত্বশীল সেই তরুণের জীবন মুহূর্তেই থেমে যায় একটি গুলিতে। রক্তে ভেসে যায় রাস্তা, থেমে যায় তার স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ। বন্ধুদের বহু চেষ্টার পরও সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়নি তাকে।
এক বছর পেরিয়ে গেছে। উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে মুগ্ধর বাড়ি আজও স্মরণ করিয়ে দেয় তাঁর অনুপস্থিতি। বইয়ের তাক, তার বিছানা, দেয়ালের ছবি—সবই নিঃশব্দ সাক্ষী।
ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত বলেন, “আমাদের একটাই দাবি ছিল, ন্যায্য বিচার। সেই সময় আমাদের কাছে ব্ল্যাংক চেকও আনা হয়েছিল, যা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি।”
বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান জানান, “সরকার চেষ্টা করছে, কিন্তু আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা যদি আন্তরিক না হন, তাহলে সঠিক বিচার আমরা পাবো না।”
এই একই দিনে, আরেক তরুণ প্রাণ—ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ—নিজের স্বপ্ন, পরিবার ও দেশকে ছেড়ে চলে যান চিরদিনের জন্য। তার স্বপ্ন ছিল উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গিয়ে দেশে ফিরে আসা। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।
সেদিন আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে ফাইয়াজ গুলিবিদ্ধ হন। অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে বন্ধুর দিকে তাকিয়ে তিনি চিরতরে চোখ বন্ধ করেন।
তার বাবা শহীদুল ইসলাম দীপন বলেন, “ফাইয়াজ শান্ত, মেধাবী ছেলে ছিল। কখনো ভাবিনি সে নেতৃত্ব দেবে। এখন চুপচাপ বসে কাঁদি। আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রেখেছি।”
১৮ জুলাই তাই শুধু একটি দিন নয়, এটি মুগ্ধ ও ফাইয়াজসহ অন্য শহিদদের স্মরণে একটি রক্তাক্ত অধ্যায়—যা আজও বিচার ও জবাবদিহির অপেক্ষায়।