ঢাকা , বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫ , ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রণক্ষেত্র গোপালগঞ্জ, ১৪৪ ধারা জারি শামীম ওসমান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলা বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আম উপহার ১৬ জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক দিবস জুলাইয়ের প্রথম ১৩ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১১৯ কোটি ডলার যুক্তরাষ্ট্রে বেনজীর আহমেদের দুটি সম্পদ ও চারটি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ কাপ্তাইয়ে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে স্থবির জনজীবন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশেই চরম সংকট চরমোনাই দরবারে এনসিপি নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণ কারানির্যাতিত ফারাবি, সাইমন, আসাদুল্লাহ সহ সকল মজলুমদের মুক্তির দাবিতে বাঙালী মুসলিম যুব সংঘের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত বাফুফের ২০ কোটি টাকার হিসাব খতিয়ে দেখছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি ৩০ দিনের মধ্যে মিনিকেট চাল বাজারজাত বন্ধের নির্দেশ ডিএমপির সহকারী কমিশনার গোলাম রুহানী সাময়িক বরখাস্ত নৌকা প্রতীক এখনই বাদ নয়, শাপলাও অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না: ইসি ৩৯ প্রভাবশালীর দখলে থাকা সরকারি জায়গা উদ্ধারে চট্টগ্রামে পাউবো’র অভিযান এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে ফলাফলে দুই বিষয়ে ফেল, শিক্ষার্থী হতবাক! সায়মা ওয়াজেদ অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে! সোহাগ হত্যা প্রমাণ করে, বিএনপি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠেছে : এনসিপি সোহাগ হত্যা: হেফাজতে ইসলামের নিন্দা ও খুনিদের শাস্তির দাবি মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যা: গ্রেফতার প্রক্রিয়া জানালো ডিএমপি, অপতথ্য না ছড়ানোর অনুরোধ
কক্সবাজার সৈকত তিন দিনেও খোঁজ মিলেনি চবি শিক্ষার্থী অরিত্রের

পর্যটকদের উদাসীনতায় বাড়ছে প্রাণহানি

  • আপলোড সময় : ১৬-০৭-২০২৫ ০১:০৭:০৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৬-০৭-২০২৫ ০১:০৭:০৭ পূর্বাহ্ন
পর্যটকদের উদাসীনতায় বাড়ছে প্রাণহানি কক্সবাজার সৈকত তিন দিনেও খোঁজ মিলেনি চবি শিক্ষার্থী অরিত্রের
কক্সবাজার সৈকতে গোসল করতে নেমে এক মাসে সাতজন পর্যটকের প্রাণহানির মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত ৮ জুলাই সাগরের হিমছড়ি পয়েন্টে ভেসে যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার হলেও এখনো নিখোঁজ এক শিক্ষার্থী। এই অস্বাভাবিক প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বিগ্ন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। এই বর্ষায় সাগরে মৃত্যুর মতো দুর্ঘটনা কেন বেশি ঘটছে– তা ভাবিয়ে তুলেছে সকলকে। এই নিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই বর্ষায় বৈরি আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় সাগর বেশি উত্তাল যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এতে সমুদ্র সৈকতে বহু গুপ্তখাল তৈরি হয়েছে। এর সাথে পর্যটকদের উদাসীনতা যোগ হয়ে বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া প্রশাসনের নানা অব্যবস্থাপনাকেও দায়ী করা হচ্ছে।
 
সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় থাকা সী সেফ লাইভ গার্ডের সুপারভাইজার সাইফুল্লাহ সিফাত জানান, বর্ষার শুরুর পর থেকে বৈরি আবহাওয়া অব্যাহত রয়েছে। গত মাস দেড়েক ধরে প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টিপাত ছিল। সেই সাথে সাগরে লঘুচাপ ও নিম্নচাপ ছিল। এই কারণে উত্তাল সাগরে নামা ছিল বিপজ্জনক। তাই সৈকতে বাড়তি সময় ও বাড়তি স্থানে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। কিন্তু পর্যটকরা এই নিষেধাজ্ঞা কোনো মতেই মানতে চায় না। এতে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটেছে।
 
সী সেফ লাইভ গার্ডের তথ্যমতে, স্রোতের টানে ভেসে গত বছর আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে মারা গেছেন পাঁচজন পর্যটক। এর আগের ৬ বছরে ভেসে গিয়ে মারা গেছেন ৪৯ পর্যটক। চলতি মৌসুমে মারা গেছেন ৮ জন। এর মধ্যে কোরবানির ঈদে কলাতলী সৈকতে গোসলে নেমে রাজশাহীর শাহিনুর রহমান (৫৮) ও সিফাত রহমান (২০) নামের পর্যটক বাবা–ছেলের মৃত্যু হয়। তারাসহ এ সময়ে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। এদের মাঝে তিনজন পর্যটক, একজন স্থানীয়। অপর দুজনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। সর্বশেষ গত ৮ জুলাই মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকালে হিমছড়ি সৈকতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রথমবর্ষের তিন শিক্ষার্থী কে এম সাদমান রহমান সাবাব, অরিত্র হাসান ও আসিফ আহমেদ। তাদের মধ্যে সাবাবের মরদেহ উদ্ধার হয় একই রাতেই এবং বুধবার সকালে ভেসে ওঠে আসিফের মরদেহ। তবে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অরিত্র হাসান।
 
অস্বাভাবিক প্রাণহানি প্রসঙ্গে সমুদ্র সৈকতে সী সেফ লাইভ গার্ডের নির্বাহী পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সমুদ্র ক্রমান্বয়ে উত্তাল হয়ে উঠছে। চলতি বছর আরো বিপজ্জনক রূপ ধারণ করেছে। বৈরি আবহাওয়ায় ভয়ানক পরিস্থিতি বিরাজমান রয়েছে সমুদ্রে। এ কারণে সমুদ্র তীরের কাছে স্রোতের গতিপথ বদল হয়ে পরিবর্তন হয়েছে গুপ্তখালের পূর্বস্থান, সেই সাথে নতুন করে সৃষ্টি হয়ে বহু গুপ্তখাল। গুপ্তখাল ও প্রবল ঢেউয়ের সাথে যোগ রয়েছে পর্যটকদের উদাসীনতা। সমুদ্রের ঢেউ ও গুপ্তখালসহ সৈকতের গতিপথ পরিবর্তন পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্ধারিত সৈকতের নির্ধারিত পয়েন্টের বাইরে গোসল না করতে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়। তিনি বলেন, কেবলমাত্র কলাতলী থেকে লাবণী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারে ২৬ জন লাইফগার্ড দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু এর বাইরের স্থানে বহু পর্যটক নিয়মিত গোসল করছে। একইভাবে নিষিদ্ধ সময়েও বারণ না মেনে নির্বিঘ্নে গোসল করে পর্যকরা। এসব কারণে প্রাণহানির ঘটনা বেড়েছে।
 
পর্যটকদের সচেতন করতে মাইকিং ও লাল পতাকা টাঙানো হলেও বাস্তবে অনেকেই তা মানছেন না। একসাথে হাজার হাজার পর্যটকের জন্য মাত্র কয়েকজন কর্মী দিয়ে সম্ভব নয় পুরো সৈকত সামলানো– এমনটি দাবি করছেন, সী সেফ লাইভ গার্ড কর্তৃপক্ষ।
 
এদিকে প্রাণহানির ঘটনার মধ্যেও নিরাপত্তাহীনতা ও অব্যবস্থাপনা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে পর্যটকসহ সংশ্লিষ্টদের। সাগর তীরে পর্যটকের ঢল থাকলেও নিরাপদ গোসলের জন্য নেই কোনো পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা। জনবল সংকটের কারণে সী সেফ লাইফ গার্ড হিমশিম খাচ্ছে।
 
ট্যুরিস্ট ক্লাব ও টুয়াকের সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, গত তিন দশকেও নির্দিষ্ট নিরাপদ গোসলের ব্যবস্থা হয়নি। সরকারি আয় বাড়লেও নিরাপত্তায় আগ্রহ নেই কারও। সমুদ্র সি–নেটিংয়ের মতো নিরাপদ ব্যবস্থা করতে কয়েক লাখ টাকাও কেউ খরচ করতে রাজি না। অথচ প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আসে এই সৈকত থেকে।
 
ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, সৈকতের অনেক জায়গায় স্রোতের তীব্রতা থাকে, লাল পতাকা টাঙিয়ে সতর্কতা দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকে নিয়ম না মেনে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েন। এ কারণে প্রাণহানি ঘটেই চলেছে।
 
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) শাহিদুল আলম বলেন, এক যুগ আগে জাল বসানো হয়েছিল নিরাপদ গোসলের জন্য। কিন্তু সেটা ঢেউয়ে ধ্বংস হয়ে যায়। এখন নতুন করে পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Kaler Diganta

কমেন্ট বক্স
ইসির প্রতীকে যুক্ত হচ্ছে দাঁড়িপাল্লা

ইসির প্রতীকে যুক্ত হচ্ছে দাঁড়িপাল্লা