শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাত ১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে করা পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সারজিস আলম বলেছেন, ‘হাসিনার মতো পুরোনো স্ক্রিপ্টে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নিয়ে আর জঙ্গি নাটক খেলার সুযোগ দেওয়া হবে না।’
এক ঘণ্টার মধ্যে তার ওই পোস্টে মন্তব্য করেছেন প্রায় ৫ হাজার নেট নাগরিক।
এর আগে, ১৫ জুলাই পুলিশের অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)-এর গোয়েন্দা শাখা সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় কথিত ‘জঙ্গি কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টতা’র অভিযোগ এনে ‘পলাতক আসামি’ হিসেবে নাম উল্লেখ করা হয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা মুফতী রেজাউল করীম আবরার, লেখক ও ইসলামি চিন্তাবিদ আসিফ আদনান এবং লেখক ও আলোচক জাকারিয়া মাসউদ-এর।
নতুন করে ইসলামি চিন্তাবিদদের বিরুদ্ধে এমন একটি মামলার পর দেশজুড়ে ইসলামপন্থী সংগঠন, নাগরিক সমাজ ও সচেতন মহলের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে একাধিক সংবাদ সম্মেলন, বাইতুল মোকাররমে বিক্ষোভ মিছিল এবং বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে মামলাটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক হিসেবে উল্লেখ করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
১৬ জুলাই বাইতুল মোকাররম উত্তর গেটে ‘জুলাই বিপ্লবীর কাফেলা’-র ব্যানারে “মিথ্যা জঙ্গি মামলা ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা”-র প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
১৭ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবে সুপরিচিত ইসলামি ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার প্রতিবাদে এবং জনপরিসরে ইসলামের অবস্থান সংকুচিত করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আসিফ আদনান ও জাকারিয়া মাসউদ।
একই দিন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ-এর ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে মুফতি রেজাউল করীম আবরারসহ অন্যান্য ইসলামি দাঈদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
১৮ জুলাই জুমার নামাজের পর বাইতুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে তৌহিদী ছাত্র-জনতার ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল।
২৪ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবে বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ জানানো হয় এবং বন্দি মুসলমানদের মুক্তি, ধর্মীয় স্বাধীনতার সুরক্ষা ও জেলখানায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাত দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।
এছাড়া ১৬ জুলাই বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানায়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান লিখিত বিবৃতিতে মামলাটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ইসলামবিদ্বেষী অপপ্রয়াস হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
১৮ জুলাই চট্টগ্রামের জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা এ মামলার তীব্র নিন্দা জানান। একইভাবে ১৬ জুলাই দারুল উলূম হাটহাজারীর শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ‘জঙ্গি নাটক’-এর পুনরাবৃত্তিকে ধর্মীয় ভাবধারার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয় এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।